কলকাতা, ১৮ জানুয়ারিঃ নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে শুভেন্দু অধিকারীকে চাপে ফেলে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মাষ্টারস্ট্রোক নেত্রী মমতার। শুভেন্দু’র কেন্দ্রে নিজেকেই প্রার্থী বলে ঘোষণা করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। এরপরেই তেখালির মঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জেতানোর আওয়াজ ওঠে। যাকে চাপে ফেলে মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণা, সেই শুভেন্দু অধিকারী বিকেলে কলকাতায় মমতার গড়ে মিছিল করে দাবি করলেন, ‘নন্দীগ্রামে মমতাকে যদি আধ লাখ ভোটে হারাতে না পারি তাহলে রাজনীতি ছেড়ে দেব।’ মমতার নন্দীগ্রামে প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্তকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। শুধু বিজেপিই নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নন্দীগ্রাম থেকে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণাকে আক্রমণ করেছেন বাম নেতাও। এদিন বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘২০১৬ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ২৯৪টা কেন্দ্রে আমিই প্রার্থী। আগে যদি জানতাম এদের প্রার্থী করতাম না। এক মাস আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ২৯৪টা কেন্দ্রের পর্যবেক্ষক আমিই’।
তাঁর কটাক্ষ, ‘এখন উনি ঘোষণা করলেন নন্দীগ্রামে প্রার্থী হবেন। উনি আর কত জায়গায় দাঁড়াবেন? আসলে নীচের তলা থেকে তৃণমূল কর্মীরা সরে যাচ্ছেন। তাদের আটকাতে এসব বলছেন তিনি। এভাবে তৃণমূল কংগ্রেস ডোবা নৌকাকে তীরে ভেড়াতে পারবে না বলে মন্তব্য বিজেপি নেতার।
‘মানুষ সরে গেছে বলেই ওঁর গলায় হতাশার সুর’, নন্দীগ্রাম থেকে মমতার ভোটে লড়ার ইচ্ছেপ্রকাশকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার। তিনি বলেন, বাংলায় আইনের শাসন নেই। মমতা সেই বিষয়ে কোনও কথা বলছেন না। তিনি বলছেন না, কীভাবে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোট হবে। সে বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কথা বলা উচিৎ বলে মন্তব্য বিজেপি নেতার। অন্যদিকে, বিজেপির পাশাপাশি মমতাকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীও।
তিনি বলেন, ‘ভবানীপুরে উনি জিততে পারবেন না বুঝে নিজের জন্য সব থেকে নিরাপদ আসনটা সবার আগে বেছে নিলেন। এভাবে নিজের পরাজয় নিজেই স্বীকার করে নিলেন উনি। সঙ্গে বিজেপিকে বার্তা দিলেন আমি তোমাদের পিছনে আছি। তৃণমূল ও বিজেপিকে পরাস্ত করতে হবে এটা পশ্চিমবঙ্গের মানুষ জানে’। সঙ্গে তাঁর দাবি, ‘হলদিয়া শেষ করেছেন। নন্দীগ্রামে যাবতীয় সম্ভাবনা শেষ করেছেন। এখন বলছেন অশোকনগরে তেল পাওয়া গেছে নন্দীগ্রামে শিল্প হবে। সিঙুরে শিল্প স্থাপনের চেষ্টা করছেন। ভোটের আগে এসব ভাঁওতা মানুষ বুঝে গিয়েছে’। উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন পর আজ সোমবার নন্দীগ্রামে পা রাখেন তৃণমূল সুপ্রিমো। এদিনের বক্তব্যের শুরু থেকেই তিনি যে নন্দীগ্রামের কাছের মানুষ তা বোঝাতে শুরু করেন নেত্রী। তিনি বলেন, কীভাবে ভুলব নন্দীগ্রামকে।আন্দোলনকে কি ভোলা যায়। এরপরেই নন্দীগ্রামের সঙ্গে তাঁর আত্মার টান বোঝাতে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে ওই বিধানসভা কেন্দ্রে নিজেকেই প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করেন। তারপর কলকাতায় মুখ্যমন্ত্রীর গড় থেকে মমতাকে হারানোর চ্যালেঞ্জ শুভেন্দুর গলায়।