নিজস্ব প্রতিনিধিঃ শুধু লিগ টেবলের শীর্ষস্থান নিশ্চিত করাই নয়, এটিকে মোহনবাগানের এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ- ভাগ্যও ঝুলে থাকল। লিগ শীর্ষে থেকে প্লে-অফে ওঠার জন্য আর একটা ধাপ বাকি ছিল এটিকে মোহনবাগানের। কিন্তু সেই একধাপ পুরো উঠতে পারল না তারা। সোমবার তারা হায়দরাবাদ এফসি-কে ইনজুরি টাইমের গোলে ২-২ ব্যবধানে আটকে রেখে এক পয়েন্ট অর্জন করতে পারল। দুই নম্বরে থাকা মুম্বই সিটি এফসি যদি তাদের পরের ম্যাচে (বনাম ওডিশা এফসি) জেতে, তা হলে শীর্ষে ওঠার জন্য আগামী রবিবার মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচ অন্তত ড্র রাখতেই হবে। তবে মুম্বই পরের ম্যাচে ড্র করলে বা হারলে শেষ ম্যাচে নামার আগেই সবুজ-মেরুন বাহিনীর এক নম্বর জায়গাটা পাকা হয়ে যাবে। সেইসঙ্গে প্রথমবার এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে সবুজ মেরুন ব্রিগেড।
সোমবার পাঁচ মিনিটের মধ্যেই দশ জন হয়ে যায় হায়দরাবাদ এফসি। গোলমুখী ডেভিড উইলিয়ামসকে টেনে ফেলে দেওয়ার জন্য চিঙলেনসানা সিংকে লাল কার্ড দেখান রেফারি অজিত মিতেই। কিন্তু সারা ম্যাচে যে পারফরম্যান্স দেখায় হায়দরাবাদ, তাতে এক বারও মনে হয়নি, তারা দশজনে খেলছে। উল্টে এটিকে মোহনবাগানকেই চাপে ফেলে দেয় তারা। স্প্যানিশ ডিফেন্ডার তিরি-র দিনটা ভাল না যাওয়ায় এ দিন সবুজ-মেরুন ডিফেন্সের ওপরও তার প্রভাব পড়ে।
ক্ষণের ভুল বোঝাবুঝিতে আট মিনিটের মাথাতেই গোল করে দলকে এগিয়ে দেন হায়দরাবাদের স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড আরিদানে সান্তানা। বিরতির পরে ৫৭ মিনিটে গোল শোধ করেন মনবীর সিং। কিন্তু ৭৫ মিনিটে পরিবর্ত ডাচ মিডফিল্ডার রোল্যান্ড আলবার্গের গোলে ফের পিছিয়ে পড়ে সবুজ-মেরুন বাহিনী। স্টপেজ টাইমের দ্বিতীয় মিনিটে প্রীতম কোটালের গোলে হারা বাঁচায় তারা। বিপক্ষ দশজন হয়ে যাওয়ায় যখন এটিকে মোহনবাগান পরিকল্পনা বদলে আক্রমণের ধার বাড়ানোর চেষ্টা শুরু করছিল, তখনই তাদের ডিফেন্সের অদ্ভূত ভুল বোঝাবুঝিতে গোল পেয়ে যান সুযোগসন্ধানী সান্তানা। বক্সের বাইরে ডানদিকে তিরিকে ব্যাক পাস করেন প্রীতম কোটাল। কিন্তু সেই পাস না নিয়ে তা গোলকিপার অরিন্দমের জন্য ছেড়ে দেন তিরি। পিছনেই যে সান্তানা ছিলেন, তা খেয়ালই করেননি স্প্যানিশ ডিফেন্ডার। বক্সের মধ্যে বলের দখল নিয়ে প্রায় ফাঁকা গোলে কোণাকুণি শট নেন সান্তানা। এমন আকস্মিক ঘটনার জন্য তৈরি ছিলেন না অরিন্দম। চলতি হিরো আইএসএলে এ রকম ভুল বোঝাবুঝি এখন পর্যন্ত সবুজ-মেরুন ডিফেন্সে সম্ভবত দেখা যায়নি। দ্বিতীয়ার্ধে লেনি রড্রিগেজের জায়গায় জয়েশ রানেকে নামান হাবাস। প্রথমার্ধের গতিতেই খেলা হয় দ্বিতীয়ার্ধেও এবং ৫৭ মিনিটের মাথায় গোল শোধও করে এটিকে মোহনবাগান। অসাধারণ এক গোল করেন মনবীর সিং। কোণাকুণি শটে এমন দর্শনীয় গোল এর আগেও করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। মাঝমাঠ থেকে বল পেয়ে ডেভিড উইলিয়ামস থ্রু বাড়ান ডানদিক দিয়ে ওঠা মনবীরকে। মনবীর বক্সের মধ্যে অনেকটা ঢুকে বাইলাইনের সামনে থেকে কোণাকুণি শটে জালে বল জড়িয়ে দেন। ৭৩ মিনিটের মাথায় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন সন্দেশ ঝিঙ্গন। সম্ভবত গোল বাঁচাতে গিয়ে অরিন্দমের সঙ্গে সঙ্ঘর্ষে চোট পান তিনি। সন্দেশের জায়গায় নামেন প্রবীর দাস। তার দশ মিনিট পরে তিরিকেও তুলে প্রণয় হালদারকে নামান কোচ। সম্ভবত চলতি লিগে এই প্রথম দুই সেন্ট্রাল ডিফেন্ডারকে ছাড়াই কিছুটা সময় খেলল হাবাসের দল।