ইস্তফা দিয়েই দিলেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়
বিচারপতির পদ থেকে ইস্তফা দিয়েই দিলেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তিনি যে আর বিচারের কাজ করবেন না রাজনীতির ময়দানে পা রাখবেন অনুমান করেছিল অনেকেই। আজ মঙ্গলবার পদত্যাগ করলেন বিচারপতি গাঙ্গুলি। এরপর দুপুর ২টো নাগাদ তিনি তার সল্টলেকের বাড়ি থেকে সাংবাদিকদের সাথে বৈঠক করবেন। প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ সেরে বাড়ি ফিরছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছিলেন যে তিনি সূর্য সেনের মূর্তির পাশে সাংবাদিক বৈঠক করবেন না। বরং তিনি সাংবাদিকদের সল্টলেকে তাঁর বাড়িতে আসতে বলেন।
কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি তার পদত্যাগের কথা রাষ্ট্রপতিকে জানিয়েছেন। মেইল নয় জিপিওর মাধ্যমে ১০টা ৩৫মিনিটে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে চিঠি পাঠানোর পাশাপাশি তিনি কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি এবং সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে তাঁর পদত্যাগপত্রও পাঠিয়েছেন। এর পরই তিনি প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানমের চেম্বারের দিকে রওনা হন।
সকাল ১০টার কিছু পরেই কলকাতা হাইকোর্টে আসেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। দুপুর ২টা ৪৭ মিনিটে তিনি এজলাস ছাড়েন এবং রাত ১০টা ৫৮ মিনিটে হাইকোর্ট। বিচারক শেষবারের মতো এজলাসে বসেছেন শুনে বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন ছুটে আসেন।
সূত্রের খবর কেউ কেউ শ্রদ্ধা জানাতে তার পা স্পর্শ করতে চাইছিলেন আবার কেউ ন্যায় বিচারের জন্য আশীর্বাদও চেয়েছিলেন। বিচারপতির পদত্যাগের খবর পেয়ে আদালত চত্বরেই কান্নাকাটি শুরু করেন কয়েকজন। কেউ কেউ আবার বলেছে ,”স্যার আপনি চলে যাচ্ছেন কেন? এটা আমাদের মন্দির। দয়া করে যাবেন না স্যার।” তবে বিচারক তার মনস্থির করে ফেলেছেন।
তাঁর শেষ মামলা ছিল পূর্ব মেদিনীপুরের সঙ্গে। রাজনৈতিক মহলে জল্পনা চলছে যে বিচারপতির পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পরে তিনি বিজেপির সাথে রাজনীতিতে যোগ দেবেন। শুধু তাই নয়, তিনি পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক কেন্দ্র থেকে বিজেপি প্রার্থী হতে পারেন,। কাকতালীয়ভাবে, কলকাতা হাইকোর্টে বিচারক হিসাবে তার শেষ মামলাটিও পূর্ব মেদিনীপুরের সাথে সম্পর্কিত ছিল, যেখানে তিনি আইন অনুসারে সেই জেলার একজন বিচারকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রধান বিচারপতিকে অনুরোধ করেছিলেন।
তিনি তার মামলার সমস্ত কাজ আগের দিন শেষ করেছেন। নিয়োগ দুর্নীতি মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পর, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় শ্রম ও শিল্প সংক্রান্ত মামলা লড়ছিলেন।
কলকাতা হাইকোর্টে তাঁর শেষ দিনে, নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাঁর ধারাবাহিক রায় এবং মন্তব্যে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ বিস্মিত হয়েছিল। অনেক লোক যারা ন্যায়বিচার পায়নি তারা বিশ্বাস করতে শুরু করেছিল যে শুধুমাত্র বিচারক তাদের অধিকার পুনরুদ্ধার করতে পারে। কেউ কেউ তাকে দেবতা হিসেবেও মানতে শুরু করে। কিন্তু হঠাৎ করে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ঘোষণা করলেন যে তিনি আর থাকবেন না…তিনি বিচারপতির পদ থেকে ইস্তফা দেবেন।