Home সংবাদসিটি টকস “আমি যা বলি সেটাই করি”-অভিষেক

“আমি যা বলি সেটাই করি”-অভিষেক

চা বাগানের শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের জন্য একগুচ্ছ প্রকল্পের ঘোষণা করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়

by Kolkata Today

কলকাতা টুডে ব্যুরো: চা বাগানের শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের জন্য একগুচ্ছ প্রকল্পের ঘোষণা করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার মালবাজারের এক সভায় উপস্থিত হয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, চা শ্রমিকদের পরিচয়পত্র দেওয়া হবে। আগামী ৩ মাসের মধ্যে সাড়ে ৩ লক্ষ চা শ্রমিকের কাছে পৌঁছে যাবে আইডেন্টিটি কার্ড। একইসঙ্গে যে সমস্ত মহিলা চা শ্রমিকরা সন্তানদের নিয়ে বাগানে কাজ করতে যান তাঁদের জন্যও নয়া এক প্রকল্পের ঘোষণা করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী আগামী ৬ মাসের মধ্যে ৫০টি ক্রেশ তৈরির কথা বলেছেন। প্রতিটি ক্রেশে ৫০ জন করে শিশুকে রাখা যাবে। এছাড়া ২-৩টি চা বাগানের জন্য একটি করে হেলথ সেন্টার তৈরি হবে বলেও জানান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেক্ষেত্রে মোট ২০টি হেলথ সেন্টার তৈরি হবে বলে জানান অভিষেক।

চা শ্রমিকদের মজুরি নিয়ে অভিষেক বলেন, “আপনাদের দাবি, আমাদেরও দাবি। ওইসব দাবিদাওয়া নিয়ে যতদূর যাওয়ার প্রয়োজন ততদূর আমরা যাব। আপনারা নিশ্চিন্তে থাকুন। সিপিএম আমলে ২০১১ সালে চা শ্রমিকদের মজুরি ছিল ৬৭ টাকা। সেই মজুরি বেড়ে এখন হয়েছে ২৩২ টাকা। অনেকের অভিযোগ, আমরা পিএফ গ্রাচুইটি পাই না। পিএফ জমা হচ্ছে কী হচ্ছে না তার কোনও SMS আসে না। ভোটের সময় যারা আসেন আর বাকী সময়ে যাদের দেখা পাওয়া যায় না তাদের উপরে কি আপনারা আস্থা রাখবেন? ভোটের আগে এসে বলেছিলাম, প্রতি দুমাসে আসব। আমি যা বলি সেটাই করি।”
তৃণমূল সাংসদ এদিন বলেন, ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল, এই সময়ের মধ্যে তিনবার প্রধানমন্ত্রী এসেছিলেন। উনি কী বলেছিলেন? ২০১৬ সালের আগে একবার এসে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, বীরপাড়া, লঙ্কাপাড় চা বাগান-সহ ৭টি চা বাগান কেন্দ্র অধিগ্রহণ করে খোলার ব্যবস্থা করবে। কিন্তু ওইসব চা বাগান খোলার ব্যবস্থা করেছে রাজ্যে সরকার। তাই বিজেপি যা বলে তা করে না। ওরা ২০১৬, ২০১৯ সালে অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, কিছু করেছে কি? কেন্দ্র বলেছিল ১০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হবে। দশ পয়সা দেখতে পেয়েছেন কেউ? এরা মিথ্যে কথা বলে। এদের ছেড়ে কথা বলা উচিত নয়। আপনাদের পিএফ ও গ্রাচুইটির দাবি ন্য়াহ্য। আপনাদের জেনে রাখা ভালো পিএফ, গ্রাচুইটির দায়ভার কেন্দ্রের। রাজ্যে শ্রমমন্ত্রী এখানে রেয়েছেন, আমার দাবি রইল এখানকার তিন লাখ চা শ্রমিকদের ৩ মাসের মধ্যে একটি আইডি কার্ড দিতে হবে। আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে ওই আইডি কার্ড আপনারা পেয়ে যাবেন। প্রতিটি চা বাগানে ৫০ শিশু রাখার জন্য ক্রেস তৈরি হবে। সেখানে নিশ্চিন্তে শিশুদের রাখতে পারবেন মায়েরা। ২-৩ টি চা বাগানকে নিয়ে প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রেও তৈরি হবে। দিদি কলকাতায় থাকলেও তাঁর কাছে সব খবর থাকে। চা পাতা ২৪ কেজির কম তোলা হলে কেজিপিছু টাকা কেটে নেওয়া হয়। এই জিনিস বন্ধ করতে হবে। চা পাতা না হলে তা উঠবে কীভাবে? রোজ যাতে শ্রমিকরা ২৩২ টাকা পান চা আমরা সুনিশ্চিত করব। চা বাগানের পাশে যেখানে থাকেন সেইসব জমির পাট্টা যাতে দেওয়া হয় তার চেষ্টা করব। চা বস্তিগুলিতে যাতে পানীয় জল পৌঁছায় তার চেষ্টা করা হবে।

পিএফ-গ্র্যাচুয়িটি সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে আন্দোলনের ডাক দেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, পিএফ-গ্র্যাচুয়িটি কেন্দ্রের বিষয়। পিএফ-গ্র্যাচুয়িটি নিয়ে প্রতিটি চা বাগানে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। আন্দোলনে কাজ না হলে প্রতিটি জেলায় পিএফ অফিস ঘেরাও করতে হবে। আর ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে যদি সমস্যার সমাধান না হয় তাহলে ১ জানুয়ারি থেকে বিজেপি সাংসদ-বিধায়কদের বাড়ি ঘেরাও করার ডাক দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রয়োজনে ঘেরাও কর্মসূচিতে তিনি নিজে উপস্থিত থাকবেন বলেও জানান অভিষেক। অধিকার বুঝে নেওয়ার জন্য ৩ লক্ষ শ্রমিক প্রয়োজনে দিল্লি যাবে বলেও এদিন হুঁশিয়ারি দেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। অন্যদিকে এদিন ট্রেড ইউনিয়নের নেতাদের শ্রমিক তথা সাধারণ মানুষের সঙ্গে থাকার পরামর্শও দেন অভিষেক।

Topics

Abhishek Banerjee  BJP  TMC Administration Kolkata

Related Articles

Leave a Comment