নিজস্ব প্রতিনিধিঃ প্রথমবার প্রথম একাদশে শুরু করেছিলেন অ্যারন আমাদি হলওয়ে। আর প্রথমবারের জন্য একসঙ্গে রিজার্ভে বসতে হয়েছিল অ্যান্থনি পিলকিংটন এবং জ্যাক মাঘোমাকে। প্রথম দলে রাখা হয়নি মহম্মদ রফিককেও। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে পরীক্ষা-নিরীক্ষার রাস্তায় হাঁটার ‘দুঃসাহস’ একমাত্র রবি ফাওলারই বোধহয় দেখাতে পারেন। তার উপর প্রথম পর্বে সুনীলদের হারানো, গত আট ম্যাচে বেঙ্গালুরু এফসি-র জিততে না-পারা ইস্টবেঙ্গল কোচকে হয়তো অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছিল। তাই বোধহয় প্রথম একাদশ বাছাইয়ে এতটা হারাকিরি। তার ফল প্রথম লেগে হারের মধুর প্রতিশোধ নিয়ে তিলক ময়দানে এসসি ইস্টবেঙ্গলকে ২-০ গোলে হারিয়ে প্লে-অফের লড়াইয়ে ফিরে এলেন সুনীল ছেত্রীরা।
অন্যদিকে ম্যাচ জিতলে প্লে-অফের যেটুকু আশা বেঁচে থাকত, হেরে সেই আশারও কার্যত সলিলসমাধি ফাওলারের ইস্টবেঙ্গলের জন্য। যা পরিস্থিতি তাতে সসম্মানে লিগ শেষ করাই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াল লাল-হলুদের কাছে। গত দু’ম্যাচে দ্বিতীয়ার্ধে জ্বলে উঠেছিল দল, তবু কাঙ্খিত ফলাফল আসেনি। তাই মঙ্গলবার যে কোনও মূল্যে তিন পয়েন্ট নিয়ে লিগে টেবিলে উপরে উঠতে চাইছিল ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু ম্যাচের ১১ মিনিটেই প্রথম যে ধাক্কাটা দিয়ে গেলেন ক্লেইটন সিলভা, গোটা ম্যাচে সেই আঘাত থেকে বেরোতে পারল না।
গুরপ্রীত সিং সান্ধুর লম্বা বল থেকে ১১ মিনিটে সতীর্থ সিলভার জন্য সুনীলের সাজিয়ে দেওয়া বলটার তারিফ করতেই হয়। বক্সের মধ্যে সুনীলের থেকে বল রিসিভ করে জোরালো ভলিতে তা জালে জড়িয়ে দেন সিলভা। গোললাইন থেকে অনেকটা এগিয়ে দাঁড়ানো দেবজিতের তাকিয়ে থাকা ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না। ২০ মিনিটে বক্সের সামান্য বাইরে গোল করার মত জায়গা থেকে ফ্রিকিক পায় ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু ব্রাইটের শট বেঙ্গালুরুর মানবপ্রাচীরে ধাক্কা খেয়ে বাইরে চলে যায়। ইস্টবেঙ্গলকে নিয়ে সেই অর্থে আর বলার তেমন কিছু নেই।
বরং প্রথমার্ধের একদম অন্তিম মিনিটে দ্বিতীয় গোল হজম করে কাজটা আরও কঠিন করে তোলে ইস্টবেঙ্গল। গোলটা দেবজিতের আত্মঘাতী গোল হিসেবে গণ্য হলেও রাহুল ভেকে এবং পরিবর্ত পরাগ শ্রীবাসের একশো শতাংশ কৃতিত্ব প্রাপ্য। ডানপ্রান্তিক ওভারল্যাপে ইস্টবেঙ্গল রক্ষণকে বোকা বানিয়ে পরাগের জন্য বক্সে সেন্টার রাখেন ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তনী ভেকে। সেন্টার থেকে চকিতে পরাগের নেওয়া দুরন্ত শট পোস্টে প্রতিহত হয়ে দেবজিতের পায়ে লেগে গোলে প্রবেশ করে। ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় বেঙ্গালুরু।
দ্বিতীয়ার্ধে স্ট্র্যাটেজি বদলে মাঘোমা, পিলকিংটনদের মাঠে নামালেও ইস্টবেঙ্গল কখনওই ম্যাচে জয় তো দূর, সমতা ফেরানোর মত খেলেনি। অনেকটাই নিষ্প্রভ ছিলেন ব্রাইট এনোবাখারে। সঙ্গী হলওয়ে কোনও সদর্থক ছাপ রাখতে ব্যর্থ। ফল যা হওয়ার তাই হয়। বলের দখল নিজেদের কাছে রেখে খেলার চেষ্টা করলেও লাল-হলুদের উদ্দেশ্য সফল হতে দেয়নি বেঙ্গালুরু ডিফেন্স। বরং কিছুটা শারীরীক ফুটবলে ফাওলারের দলের কাজ কঠিন করে তোলে তারা। সুনীলের একটি গোলার মত শট ক্রসবার কাঁপিয়ে না ফিরে আসলে বরং ব্যবধান বাড়ত বেঙ্গালুরুর। যদিও আট ম্যাচ পর জয়ে ফিরতে তা কোনওরকম বাধা সৃষ্টি করেনি সুনীলদের জন্য। ১৫ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে ছ’য়ে উঠে এল ব্লুজরা। সমসংখ্যক ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলে দশেই রইল লাল হলুদ।