নিজস্ব প্রতিনিধিঃ দল তাড়ানোর পর আরও আক্রমণাত্মক বালির বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়া। ‘উইপোকা তত্ত্ব’ নিয়ে আরও ধারাল জগমোহন ডালমিয়ার কন্যা। দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে বহিষ্কৃত হওয়ার পর আরও আক্রমণাত্মক মেজাজে ব্যাটিং করছেন বালির ‘দলহীন’ বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়া। তাঁর ক্ষোভ যে হাওড়া জেলা নেতৃত্বের (বিশেষত, মন্ত্রী অরূপ রায়) বিরুদ্ধে, শুক্রবার দল তাড়িয়ে দেওয়ার পর বারবার সেটাই বোঝাতে চেয়েছেন বৈশালী। সরব হয়েছেন দুর্নীতির অভিযোগেও। তিনি কি এবার বিজেপিতে যোগ দেবেন? বৈশালীর সংক্ষিপ্ত জবাব, ‘লেটস সি। দেখা যাক।’ অর্থাৎ, সেই সম্ভাবনা একেবারেই উড়িয়ে দেননি প্রয়াত জগমোহন ডালমিয়ার কন্যা। উল্টে তিনি তাঁর ‘উইপোকা’ তত্ত্বে অনড়। আগের মতোই তিনি বলছেন, ‘উইপোকারা দলকে ভিতর থেকে কুরে কুরে খাচ্ছে।’
লক্ষ্ণীরতন শুক্লার মন্ত্রিত্ব এবং হাওড়া তৃণমূলের সভাপতি পদ ছাড়ার পর তাঁর সেই সিদ্ধান্ত সমর্থন করেছিলেন বৈশালী। শুক্রবার রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় মন্ত্রিত্বে ইস্তফা দেওয়ার পরেও একই অবস্থান নিয়েছিলেন বৈশালী। সঙ্গে দলের কড়া সমালোচনা করেছিলেন। বলেছিলেন, লক্ষ্মী দলের কাজ করতে পারছেন না। লক্ষ্মীর মতো তিনিও দলের কাজ করতে পারছেন না। রাজীবের ঘটনার পরেও তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে প্রকাশ্যেই দলের সমালোচনা করেছেন বৈশালী। তার পরেই দল তাঁকে বহিষ্কার করল দল।
তৃণমূল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের পরেই আরও বিস্ফোরক হয়েছেন বৈশালী। বলেছেন, ‘মানুষ পরিষেবা পাচ্ছেন না। বিধায়কদের কাছে ত্রাণের টাকা আসে না। আমপানের সময় ত্রাণের টাকা আমরা পাইনি। কোভিডের জন্য যে পরিমাণ চাল দেওয়ার কথা, সেটা থেকেও কেটে নেওয়া হল। মানুষ বিপাকে পড়েছেন। তাঁদের পাশে দাঁড়ানো, তাঁদের আগলে রাখা যদি দলবিরোধী কাজ হয়, তা হলে আমি সেটা করেছি।’
দলের একাংশের অবশ্য অভিযোগ, বিধানসভা নির্বাচনে তিনি টিকিট পাবেন না বুঝেই দলের বিরুদ্ধে ক্রমাগত মুখ খুলেছেন বৈশালী। বালি এলাকায় তাঁর বিরুদ্ধে ‘বহিরাগত’ বলে পোস্টারও পড়েছিল। বহিষ্কারের পর শুক্রবার নির্বাচনের টিকিট বণ্টন নিয়েও অসন্তোষের কথা জানিয়ে বৈশালী বলেন, ‘আমি বলেছিলাম, কাকে টিকিট দেওয়া হবে বা হবে না, সেটা জেলা নেতৃত্ব নয়, ঠিক করুন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তা হলে বিধায়করা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে দায়বদ্ধ থাকবেন। সেটা যদি দলবিরোধী কাজ হয়, তা হলে আমি দলবিরোধী।’ তাঁর কথায়, ‘আমায় প্রশ্ন করা হচ্ছে বলে জবাব দিচ্ছি। কোথাও কোনও হলেও চুপ করে থাকতে হবে। হাসি হাসি মুখে থাকতে হবে। সেটা তো হতে পারে না।’