কলকাতা, ২৬ জানুয়ারিঃ জল্পনা ছিলই এবার দলের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল। পরে শোকজের নোটিশও ধরাল দল। উত্তরপাড়ার সাংবাদিক-বিধায়ক দলের একাংশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনলেন। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে খোদ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও নির্দেশ মানা হচ্ছে না। এমন বিস্ফোরক অভিযোগ প্রবীর ঘোষালের। উল্লেখ্য, গত কয়েকদিন ধরেই লাগাতার দলের বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন উত্তরপাড়ার বিধায়ক। তাঁর বিরুদ্ধে দলের একাংশ ষড়যন্ত্র করছে বলেও মারাত্মক অভিযোগ করেন তিনি। শুধু তাই নয়, রাস্তা সহ একাধিক কাজ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। কার্যত লাগাতার দলের বিরুদ্ধে মুখ খুলে চক্ষুশূল হন প্রবীরবাবু। এরপর সোমবার হুগলির পুরশুড়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় না থাকা নিয়ে জোর জল্পনা তৈরি হয়।
রাজনৈতিকমহলের একাংশের মতে, তাঁর বিজেপিতে যোগ শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা। যদিও সমস্ত কিছু মঙ্গলবার জানাবেন বলে জানিয়েছিলেন তিনি। সেই মতো আজ মঙ্গলবার সকালে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন উত্তরপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক। সেখানে তাঁর বিস্ফোরক অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর কথা অনেক নেতা শুনছে না। দলে কাজের পরিবেশ নেই। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বা বৈশালী ডালমিয়ার সুরেই তিনিও বলছেন, এই পরিস্থিতিতে কাজ করতে পারছি না। তবে দল যে তিনি এখনই ছাড়ছেন না তা কার্যত স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।সাংবাদিকদের সামনে প্রবীরবাবু এদিন বলেন, ‘এখনই দল ছাড়ছি না। তবে আমাকে হারানোর জন্য দলে একটি চক্র তৈরি হয়েছে।’
প্রবীরবাবু আরও বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেব। কিন্তু বিধায়ক না থাকলে সাধারণ মানুষকে হয়রানির শিকার হতে হয়। তাই সিদ্ধান্ত বদল করতে বাধ্য হয়েছি।’ ঠিক এরপরই জেলার তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্যপদ ও জেলা তৃণমূলের মুখপাত্রের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করেন প্রবীর ঘোষাল। দলের কর্মপদ্ধতিরও সমালোচনা করেন। ঠিক তারপরই প্রবীরকে শোকজ করে তৃণমূল। সঙ্গে দল প্রসঙ্গে নানা নেতিবাচক মন্তব্যের জন্য সতর্ক করা হল উত্তরপাড়ার বিধায়ককে।
তবে কি তৃণমূলও ছাড়বেন তিনি? প্রশ্নের উত্তরে বলেন, “কাজ করতে পারছিলাম না, নিজেকে ব্রাত্য মনে হচ্ছিল। তবে দল ছাড়ব কি না জানি না, সেসব নিয়ে ভাবিনি।” অন্যদিকে, প্রাক্তন বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূয়সী প্রশংসা করেন প্রবীরবাবু। বলেন, ‘রাজীবের মতো ভাল ছেলে কাজ করতে পারল না। আমাদের বুঝতে হবে পরিস্থিতি কোথায় গিয়েছে।’ শুধু রাজীবের নয়, শুভেন্দু অধিকারীরও এদিন প্রসংসা শোনা যায় প্রবীরবাবুর মুখে।