রাজ্যের ১৫ জেলা পাট চাষি প্রধান । তার মধ্যে ৬ জেলা উত্তরবঙ্গে । মালদা, কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, জলপাইগুড়ি, রায়গঞ্জ। মুর্শিদাবাদ, বীরভুম, দক্ষিণ ২৪ পরগণা ও পাট নিবিড় এলাকা । বেশিরভাগ সংখ্যালঘু মানুষের বাস ।
বিধানসভার ২৯৪ আসনের মধ্যে আনুমানিক ১১২ আসন পাট আর চটকল এলাকায় । উত্তরবঙ্গে মোট ৫৪ আসন । আসন্ন রাজ্য বিধানসভা ভোটে বি জে পি-র পাখির চোখ এই ৫৪ আসন । ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গের ৯ আসনের বি জে পি জেতে ৭ আসন ।
রাজ্যের পাট চাষের কেন্দ্রবিন্দু উত্তরবঙ্গ । ১০০ গাঁট পাটের ৭০ শতাংশই চাষ হয় উত্তরবঙ্গ -এর ৬ জেলায় । উন্নত মানের কাঁচা পাট উৎপাদনের কেন্দ্র উত্তরবঙ্গ ।
রাজনৈতিক মহলের ধারণাঃ বি জে পি-র মত কলকাতা (১১), উত্তর ২৪ পরগণা (৩৩), আর দক্ষিণ ২৪ পরগণার (৩১) মোট -৭৫ আসন টার্গেট করেছে তৃণমূল । এর মধ্যে উত্তর আর দক্ষিণ ২৪ পরগণা ৬৪ আসন – চটকল অধ্যুষিত ।
২০১৯ – এর লোক সভায় এর মধ্যে দু জেলায় ধরাশায়ি হয় বি জে পি । তারা মাত্র ৫ আসনে তৃণমূলের চেয়ে এগিয়ে ছিল। এই দু জেলায় আনুমানিক ২৬ টি চটকল রয়েছে । শ্রমিক সংখ্যা আনুমানিক ১ লক্ষ – এর বেশি ।
রাজ্যের ২ লক্ষ চটকল শ্রমিকের মধ্যে ৫০ শতাংশই উত্তর আর দক্ষিণ ২৪ পরগণায় । এই আসনে ও থাবা বসাতে চায় বি জে পি । আর শুভেন্দু অধিকারী তাদের তুরূপের তাস ।
উপরের চিত্র বিচার করলে এটা বোঝা যায় কেন শুভেন্দু – কে জুট করপোরেশন অফ ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান করা হয়েছে ।
এই সারিতে শুভেন্দু চতুর্থ ব্যক্তি । সাতের দশকের গোড়ায় কংগ্রেস নেতা সাংসদ ইদ্রিশ আলি, দৈপায়ন সেন আর সন্তোষ রায়কে চেয়ারম্যান করা হয় । ১৯৭১ সালে জুট করপোরেশন তৈরি হয় । পাট ও চটকল নিবিড় এলাকায় বি জে পি-র মুখ করে তোলার জন্য – ই শুভেন্দুকে চেয়ারম্যান করা হয়েছে ।
২০১৯ – এর লোকসভা ভোটে আনুমানিক ১১ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোট পেয়েছিল বি জে পি । সেই শতাংশ বৃদ্ধির আশায় এবার কোমর বেঁধে নেমেছে বি জে পি ।
পাট চাষিদের মনোবল বাড়াতে আর সেই সঙ্গে ভোটে তাদের সমর্থন জোটাতে মরিয়া বি জে পি । আপাতত করপোরেশনের ১৭০ টি পাট সংগ্রহকারী কেন্দ্রের বেশিরভাগ অকেজো ।
শুভেন্দু তা ঘোরাতে পারলে সংখ্যালঘু চাষীদের ভোট পাওয়া যাবে এটা ই বি জে পি- র আশা । আর তাই পাট এলাকায় শুভেন্দুকে পারের তরী করে তারা আসরে নামিয়েছে ।