Home ভিডিও মকর সংক্রান্তির বিশেষ গুরুত্ব ও ঐতিহ্

মকর সংক্রান্তির বিশেষ গুরুত্ব ও ঐতিহ্

by Kolkata Today

কলকাতা টুডে ব্যুরো: হিন্দুদের প্রধান উৎসবগুলির মধ্যে মকর সংক্রান্তি বছরের সর্বপ্রথম উৎসব। এটি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পালিত হয়।পৌষ মাসের শেষ দিন পালন করা হয়।  তবে হিন্দু ধর্মে, এই উৎসবকে ঘিরে শোনা যায় নানা লোককথা।

আরও পড়ুনঃ ’করোনাকালে গঙ্গাসাগরের মত উৎসব যথাসম্ভব ভাবে সম্পন্ন করা একটা বড় চ্যালেঞ্জ,’ফিরহাদ হাকিমের

মনে করা হয়, মকর সংক্রান্তিই মরসুমের নতুন ফসল ওঠার প্রথম দিন ও শীতকালের শেষ দিন। সংক্রান্তির সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাঙালিদের বেশ কয়েকটি নিয়মাচার। এই বিশেষ দিন দূরে কোথাও যাত্রা করা ঠিক না এবং অন্য কোথাও গেলেও রাতে বাড়ি ফিরে আসার নিয়ম। সংক্রান্তির আগে বাঙালিরা ঘরবাড়ি, রান্নার বাসন পরিষ্কার করেন এবং অশুভ শক্তিকে বিদায় জানান।

আরও পড়ুনঃ রাজ্যে দৈনিক করোনা সংক্রমণ ২৩,৪৬৭,কলকাতায় আক্রান্ত ৬,৭৬৮

পশ্চিমবাংলায় এই বিশেষ দিনটিকে পৌষ সংক্রান্তি বা পৌষ পার্বণ নামে পরিচিত। গ্ৰাম বাংলার বিভিন্ন বাড়িতে আলপনা দেওয়া হয়। তাছাড়াও ঘরে ঘরে পিঠে- পুলি-পায়েস তৈরি করে নতুন মাসকে স্বাগত জানানো হয়। সপ্তাহ খানেক আগে থেকেই চলে তার প্রস্তুতি। এই পৌষ সংক্রান্তিতে মূলত চালের গুড়ো, ময়দা, নারকেল, দুধ, গুড় দিয়ে বিভিন্ন পিঠে তৈরি হয়। তার সঙ্গে তিল, কদমা এইসব খাওয়ার রীতিও রয়েছে।

আরও পড়ুনঃ করোনা আক্রান্ত হৃতিক রোশনের প্রাক্তন স্ত্রী সুজান খান

গঙ্গা ও সাগরের সঙ্গমে কেন মকর সংক্রান্তিতে স্নান করেন মানুষ?

পৌরাণিক গল্প বলে, অযোধ্যার ঈক্ষাকু বংশের রাজা সগরের অশ্বমেধ যজ্ঞের ঘোড়া চুরি করেন দেবরাজ ইন্দ্র। তিনি ঘোড়াগুলি গঙ্গাসাগরে কপিল মুনি আশ্রমের পেছনে লুকিয়ে রেখেছিলেন। সেই ঘোড়া খুঁজতে গিয়েই কপিল মুনির রোষে পড়ে ভস্মীভূত হয়েছিলেন সগর রাজের ষাট হাজার জন ছেলে।

আরও পড়ুনঃপশ্চিমী ঝঞ্জার দাপটে পৌষের শেষেও মুখ ঢেকেছে শীত

বিশ্বাস করা হয়, তাঁদের উদ্ধার করতেই সগরের নাতি ভগীরথ কপিল মুনির নির্দেশ মতো স্বর্গ থেকে গঙ্গাকে মর্ত্যে নিয়ে আসেন।গঙ্গা শিবের জটা থেকে বেরিয়ে পৃথিবীতে প্রবাহিত হয়ে কপিল মুনির আশ্রমে পৌঁছেছিল। মিলেছিল সাগরে। সেই দিন ছিল মকর সংক্রান্তি। বলা হয় মকরসংক্রান্তির দিনে সূর্য নমস্কার এর একটি বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে মানব জীবনে।

শাস্ত্র মতে মকর সংক্রান্তির গুরুত্ব

মকর সংক্রান্তির দিন দান, স্নান ও সূর্য আরাধনার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। এদিন সূর্যকে লাল বস্ত্র, গম, গুড়, মুসুর ডাল, তামা, সোনা, সুপুরি, লাল ফুল, নারকেল, দক্ষিণা ইত্যাদি অর্পণ করা উচিত। মকর সংক্রান্তির দিনে পুণ্যকালে দান করলে অক্ষয় ফল ও পুণ্য লাভ হয়।

সূর্য যখন দক্ষিণায়নে থাকেন, তখন সেই ৬ মাস দেবতাদের রাত ও উত্তরায়ণের ৬ মাস দেবতাদের দিন হিসেবে বিবেচ্য। দক্ষিণায়নকে অন্ধকার ও অশুভ প্রতীক মনে করা হয়। আবার উত্তরায়ণ শুভ এবং প্রকাশের প্রতীক। উত্তরায়ণের গুরুত্ব বর্ণনা করে কৃষ্ণ গীতার অষ্টম অধ্যায় বলেছেন, ৬ মাস যখন ভাস্কর দেব উত্তরায়ণে থাকেন, তখন পৃথিবী আলোকিত হয়।

মকর সংক্রান্তির দিন গঙ্গা স্নানের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। শাস্ত্র মতে, মকর সংক্রান্তির দিনই বিষ্ণুর বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ থেকে নির্গত গঙ্গা ভগীরথের পিছন পিছন কপিল মুনির আশ্রমে পৌঁছন। কপিল মুনির আশ্রম থেকেই সাগরে মিশে যান গঙ্গা। সে সময় গঙ্গা ভগীরথের পূর্বপুরুষ মহারাজ সগরের পুত্রদের মুক্তি প্রদান করেন। তাই গঙ্গা ও গঙ্গাসাগরে স্নানের গুরুত্ব অপরিসীম।

শাস্ত্র মতে মকর সংক্রান্তির দিন সূর্যোদয়ের পূর্বে স্নান করা উচিত। এমন করলে ১০ হাজার গৌদানের সমান ফল লাভ হয়। এ সময়ের তর্পণ, দান ও দেব আরাধনা অক্ষয় হয়।

মকর সংক্রান্তিতে গুড়, চাল, দুধ ইত্যাদি সহকারে নানা ধরনের উপাদেয় মিষ্টি, পিঠে, পুলি, পায়েস ইত্যাদি বানানো হয় এবং খাওয়া হয়।শুধু বাংলায় বাঙালিরাই নন, আমাদের দেশের নানা প্রান্তে এই দিনটিকে নানা ভাবে বিশেষ বিশেষ উৎসবের সঙ্গে পালন করা হয়। বাঙালিরা এই দিনটিতে পুজো করে পিঠে-পুলি বানিয়ে খাওয়া দাওয়া করে।

পৌষ বা মকর সংক্রান্তি বাঙালি সংস্কৃতির একটি বিশেষ উৎসব বা বিশেষ ঐতিহ্যবাহী দিন।

 

Topics

Gangasagar Mela Makar Sankranthi Devotees Celebration Administration Kolkata

Related Articles

Leave a Comment