কলকাতা টুডে ব্যুরো:রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে এনডিএ জোটের প্রার্থী হচ্ছেন দ্রৌপদী মুর্মু। এ বার তাঁর গন্তব্য রাইসিনা হিল। রাষ্ট্রপতি পদে বিরোধীদের প্রার্থী যশবন্ত সিন্হাকে হারালে দ্রৌপদীই হবেন দেশের প্রথম আদিবাসী মহিলা রাষ্ট্রপতি।
প্রথম জীবনে শিক্ষিকা থেকে মন্ত্রী। পরবর্তী কালে রাজ্যপাল।এক দিকে যেমন ক্রমাগত তিনি সাফল্যের চূড়ায় উঠেছেন, অন্য দিকে তিনি হারিয়েছেন তাঁর প্রিয়জনদের। ‘মহাভারতের দ্রৌপদী’ যেমন পুত্রশোকে আত্মহারা হয়ে পড়েছিলেন, এই দ্রৌপদীও তাঁর দুই পুত্রকে হারিয়েছেন, তা-ও তিন বছরের ব্যবধানে।শুধু মাত্র তাঁর পুত্রদের নয়, নিজের স্বামীকেও হারিয়েছেন তিনি। শ্যামচরণ মুর্মুর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন দ্রৌপদী। মুর্মু দম্পতির পরিবারে দুই পুত্র ও কন্যা বড় হয়ে উঠছিল। কিন্তু হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন শ্যামচরণ।
এর পর দ্রৌপদীর ব্যক্তিগত জীবন আরও কঠিন হয়ে পড়ে। ২০০৯ সালের ঘটনা। তাঁর পুত্র লক্ষ্মণ তখন মায়ের সঙ্গে রায়রংপুরে ছিলেন না। সেই সময় পত্রপড় এলাকায় তাঁর কাকার বাড়িতে থাকছিলেন দ্রৌপদী-পুত্র।হঠাৎ এক দিন সকালবেলায় বিছানা থেকে জ্ঞানহীন অবস্থায় উদ্ধার করা হয় লক্ষ্মণকে। সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে নিকটবর্তী বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাঁকে ভুবনেশ্বরের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
পুলিশ তদন্তের দাবি, লক্ষ্মণ আগের রাতে তাঁর বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে একটি রেস্তরাঁয় নৈশভোজনে গিয়েছিলেন। পরে তাঁর বন্ধুরাই অটোরিকশায় তাঁকে কাকার বাড়িতে পৌঁছে দেন। বাড়ি ফিরে তিনি খুব একটা সুস্থ বোধ করছিলেন না।ক্লান্ত রয়েছেন ভেবে আর তাঁর সঙ্গে কেউ কথা বলেননি। পরের দিন সকালেই তাঁকে জ্ঞানহীন অবস্থায় পাওয়া যায়।ঠিক কী কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছিল তা আজও রহস্য।
পুত্রশোক কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আরও এক বার ধাক্কা আসে দ্রৌপদীর জীবনে। লক্ষ্মণের মারা যাওয়ার তিন বছর পর তাঁর দ্বিতীয় পুত্রকে পথ দুর্ঘটনায় হারান তিনি।দ্রৌপদীর এক মাত্র কন্যা ইতিশ্রী মুর্মু পেশায় এক ব্যাঙ্ককর্মী। তিনি গণেশ হেমব্রম নামে এক রাগবি খেলোয়াড়কে বিয়ে করেন। তাঁদের এক কন্যাও রয়েছে।
জীবনে এত ঝড় সামলে বর্তমানে দ্রৌপদীর গন্তব্য রাইসিনা হিল। বিরোধী প্রার্থী যশবন্ত সিনহাকে হারিয়ে রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হলে দ্রৌপদীই হবেন দেশের দ্বিতীয় মহিলা রাষ্ট্রপতি এবং প্রথম আদিবাসী মহিলা রাষ্ট্রপতি।