কলকাতা টুডে ব্যুরো: ডিএ মামলায় কলকাতা হাই কোর্টে বড় ধাক্কা খেল রাজ্য। বিচারপতি হরিশ টন্ডন এবং বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তর ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিল, তিন মাসের মধ্যে বকেয়া ডিএ মেটাতে হবে। আদালতে রাজ্য জানায়, তহবিলে টাকা নেই বলে উঁচু হারে ডিএ দেওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু রাজ্যের এই যুক্তি গ্রাহ্য করেনি ডিভিশন বেঞ্চ। আদালত তাদের নির্দেশে জানিয়েছে, আগামী তিন মাসের মধ্যে স্টেট অ্যাডমিনস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনালের (স্যাট)-এর রায় কার্যকর করতে হবে। শুধু তাই-ই নয়, আদালত বলেছে, মহার্ঘ ভাতা আইনত অধিকার, মৌলিক অধিকার। ফলে, স্যাট-এর রায় বহাল রাখল ডিভিশন বেঞ্চ।
শুক্রবার হাই কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, “কেন্দ্রীয় হারেই ডিএ দিতে হবে সরকারি কর্মীদের। মহার্ঘ ভাতা সরকারি কর্মচারিদের সাংবিধানিক এবং মৌলিক অধিকার। রাজ্য সরকারের কৌসুলিদের যুক্তি খারিজ করে দিয়ে আদালত জানিয়ে দেয়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে মহার্ঘ ভাতা অন্যরকম ছিল। ১৯৪৭ সালে প্রথম বেতন কমিশন গঠন হওয়ার পর থেকেই DA বেতনের অংশ হিসাবে বিবেচিত। জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি হলে সরকারকে ডিএ দিতেই হবে। হাই কোর্টের নির্দেশ, “রাজ্য সরকার অল ইন্ডিয়া কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স অনুযায়ী DA দিতে বাধ্য। রাজ্য সরকারি কর্মীরা ডিএ পাবেন ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী। ৩ মাসের মধ্যেই রাজ্য সরকারকে কর্মীদের ডিএ মিটিয়ে দিতে হবে।”
রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের হিসেব মতো পঞ্চম বেতন কমিশন ও ষষ্ঠ বেতন কমিশন মিলিয়ে প্রায় ৬৮ শতাংশ ডিএ বকেয়া রয়েছে। তার মধ্যে ৩৪ শতাংশের দাবিতে মামলা সরকারি কর্মীদের।
আরও পড়ুনঃ Partha Chatterjee:রক্ষাকবচ নিয়ে পার্থের আর্জি খারিজ করল আদালত
মহার্ঘ ভাতা প্রদানের নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্যকে। পরে স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনালও মূল্যবৃদ্ধির নিরিখে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা প্রদানের নির্দেশ দেয়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত রাজ্য সরকার কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা অনেকটাই বকেয়া রেখেছে বলে অভিযোগ কর্মচারীদের। ডিএ ইস্যুতে রাজ্য সরকারের বক্তব্য ছিল, এই সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার এক্তিয়ার একমাত্র বিধানসভারই আছে। অবশ্য আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, মূল্যবৃদ্ধির নিরিখে মহার্ঘ ভাতা পাওয়া কর্মীদের অধিকার। আর এই পর্যবেক্ষণেই আশার আলো দেখেছিলেন রাজ্য সরকারি কর্মীরা। বাস্তবে সেই আশাই এবার দিনের আলো দেখল।