২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার আগেই বাংলায় নির্বাচনী লড়াই জমে উঠেছে। শনিবার, বিজেপি রাজ্যের ২০টি আসনের জন্য তাদের প্রার্থী ঘোষণা করেছে। এবং রবিবার, একটি অনন্য পদক্ষেপ নিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বিচারপতির আসন থেকে অবসর নেওয়ার এবং রাজনৈতিক ময়দানে প্রবেশের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন। এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় কে স্বাগত জানিয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। শাসক দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ থেকে শুরু করে অধীর রঞ্জন চৌধুরী এবং মহম্মদ সেলিম সকলেই জানিয়েছে বিচারপতির আসনে থাকা এমন গুরুত্বপূর্ণ একজন পেশার মানুষ রাজনীতিতে এলে তা ভালোই হবে।
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ব্যাপকভাবে তৃণমূল কংগ্রেসের সমালোচক হিসেবে পরিচিত এবং প্রায়ই সকলের সামনে তার বামমনস্কতা প্রকাশ্যে এসেছে।
তার বিচার বিভাগীয় অবস্থান থেকে অবসর নেওয়ার এবং রাজনীতিতে প্রবেশ করার ঘোষণা তাকে লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার বিষয়ে ব্যাপক জল্পনা-কল্পনার জন্ম দিয়েছে, যা তাকে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে একজন শক্তিশালী নতুন প্রতিযোগী করে তুলেছে। প্রায় সব রাজনৈতিক দল তাকে স্বাগত জানিয়েছে, এবং তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের সাথে তার ব্যক্তিগত সম্পর্ক রয়েছে। তিনিই সর্বপ্রথম চ্যালেঞ্জের সুরে বিচারপতিকে অবসর নিয়ে রাজনৈতিক ময়দানে নামার কথা বলেন । বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় রবিবার তাঁর সিদ্ধান্ত ঘোষণার সময় এই কথা উল্লেখ করেন। এর পরই সোশ্যাল মিডিয়ায় তাকে রাজনৈতিক ময়দানে স্বাগত জানান কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, রাজনৈতিক মত পার্থক্য থাকবে। তবে, অন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ পেশার কেউ যদি রাজনীতিতে প্রবেশ করে, তাহলে তা সংসদীয় গণতন্ত্রের জন্য স্বাস্থ্যকর এবং ইতিবাচক।
সিপিআই(এম) থেকে, মহম্মদ সেলিম মন্তব্য করেছেন, “”নানা মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নানা পর্যবেক্ষণ শাসকদলের অনেক সময় পছন্দ হয়নি। তাঁকে অনেক সময় অপমানও করা হয়েছে। হয়ত তাতেই তিনি অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে যদি তাঁর মতো মানুষ ভোটে লড়াই করেন, প্রার্থী হন, তাহলে আমরা তাঁকে স্বাগত জানাচ্ছি।” কংগ্রেসের অধীর রঞ্জন চৌধুরীও বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে স্বাগত জানিয়েছেন।
অন্যদিকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, “অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বড় নাম। আরও অনেক বড় নাম রয়েছে। দেখুন আরও কত বড় বড় নাম আসবে। আমরা (বিজেপি) দরজা খুললে কত বড় বড় লোক আসবে দেখতে থাকুন। তবে এবারে আর পচা আলু নেব না। বেছে বেছে নেব।”বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পল প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন, “সবে শুনেছি যে উনি বিচারপতির পদ থেকে অবসর নিচ্ছেন। কিন্তু বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন বা ভোটে দাঁড়াচ্ছেন, তেমন খবর অন্তত আমার কাছে নেই। কিন্তু ওঁর মতো মানুষ যদি বিজেপিতে আসেন, লোকসভা ভোটের টিকিট পান, তাহলে আমাদের জন্য তা অত্যন্ত গর্বের বিষয় হবে।” শুভেন্দু অধিকারী উল্লেখ করেছেন, “উনি তো বিচারপতির পদ থেকে অবসর নেবেন বলে জানিয়েছেন। রাজনীতিতে নামবেন। তবে সেসব আগে হোক, তার পরই আমি এনিয়ে প্রতিক্রিয়া দেব।”