পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বর্তমানে তাঁর কালীঘাটের বাড়িতে রয়েছেন।
হাসপাতাল সূত্র ও তার ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন, তার অবস্থা এখন স্থিতিশীল। শুক্রবার তার শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা করার কথা রয়েছে চিকিৎসকদের। বৃহস্পতিবার, এসএসকেএম কর্তৃপক্ষের “পেছন থেকে ধাক্কা” মন্তব্য নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছিল। পরে, এসএসকেএম কর্তৃপক্ষের দ্বারা এই মন্তব্যের একটি ব্যাখ্যাও দেওয়া হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা কালীঘাটে নিজের বাড়িতে পড়ে গিয়ে কপালে ও নাকে গুরুতর চোট পান। সন্ধ্যায় তাকে এসএসকেএম হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছিল, যেখানে চারটি সেলাই করার পরে রক্তপাত বন্ধ হয়েছিল – তিনটি তার কপালে এবং একটি তার নাকে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে হাসপাতালে পৌঁছানোর পর মুখ্যমন্ত্রী চিকিৎসকদের বলেছিলেন যে পিছন থেকে ধাক্কা অনুভব করার পরে তিনি পড়ে গিয়েছিলেন। এই সূত্রগুলি ইঙ্গিত দেয় যে সিটি স্ক্যান করা হলেও কোনও সেরিব্রাল হ্যামারেজ হয়নি ,বৃহস্পতিবার রাতে এসএসকেএম ডিরেক্টর মণিময় বন্দোপাধ্যায় মেডিক্যাল বুলেটিনে জানিয়েছেন, “সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ মুখ্যমন্ত্রীকে হাসপাতালে আনা হয়। নিজের বাড়িতে পিছন থেকে ধাক্কায় (পুশ ফ্রম বিহাইন্ড) তিনি পড়ে যান।… কপালে গভীর ক্ষত তৈরি হয়।”
মণিময়ের বক্তব্যকে ঘিরে শুরু হয় নানা আলোচনা। কিন্তু পরিস্থিতি আরও বিতর্কিত হয়ে ওঠে যখন মমতার ভগ্নিপতি কাজরী বন্দোপাধ্যায়কেও বলতে শোনা যায়, “আমি শুনেছি তিনি ধাক্কায় পড়ে গিয়েছিলেন।” এটি মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তায় একটি উল্লেখযোগ্য “অবহেলা” নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। ব্যাপক বিতর্কের মধ্যে, এসএসকেএম দ্রুত “পিছন থেকে ধাক্কা” মন্তব্যটি স্পষ্ট করেছে। শুক্রবার সকালে, মণিময় দাবি করেন, “আমার কথার ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। কখনও কখনও, যখন কেউ অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়, তখন পেছন থেকে ধাক্কা দেওয়ার মতো কিছু অনুভব করতে পারে।” তিনি আরও বলেছিলেন, “মুখ্যমন্ত্রী হয়তো বলতে চেয়েছিলেন যে তিনি পড়ে যাওয়ার সময় ধাক্কার অনুভূতি হয় , তার অর্থ এই নয় যে কেউ তাকে ধাক্কা দিয়েছে।”
বৃহস্পতিবার বিকেলে গড়িয়াহাটে প্রয়াত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের একটি মূর্তি উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী বাড়ি ফেরার পরপরই এই ঘটনা ঘটে। পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সময় তৃণমূল কংগ্রেসের জাতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায় মমতার কালীঘাটের বাড়িতেই ছিলেন। তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে তাঁর গাড়িতে করে এসএসকেএমে নিয়ে যান। মমতাকে উডবার্ন ওয়ার্ডে ভর্তি করার পর তাৎক্ষণিক চিকিৎসা শুরু করেন আট চিকিৎসকের একটি দল। প্রাথমিক পরিচর্যা ও সেলাই করার পর তার মাথায় ব্যান্ডেজ করা হয়েছে। পরে, পার্শ্ববর্তী বাঙ্গুর ইনস্টিটিউট অফ নিউরোলজিতে একটি সিটি স্ক্যান করা হয়েছিল, যাতে বোঝা যায় আঘাত কতটা গভীর। এবং রাট ১০ তা নাগাদ তাকে বাড়ি ফিরিয়ে আনা হয়। সূত্রের খবর শক্ত কিছুতে আঘাত লেগেই মাথায় ও নাকে গভীর ক্ষত হয়েছে। চিকিৎসকেরা তাকে হাসপাতালেই রাখতে চেয়েছিলেন তবে মুখ্যমন্ত্রীই বাড়ি ফিরতে চেয়েছিলেন। তবে চিকিৎসকেরা বলেছেন তার এখন বিশ্রামের প্রয়োজন শুক্রবার আবারো তার শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা করা হবে।