গোয়ার সার্ভিস অ্যাপার্টমেন্টে নিজের চার বছরের ছেলেকে শ্বাসরোধ করে হত্যা
গোয়ার সার্ভিস অ্যাপার্টমেন্টে নিজের চার বছরের ছেলেকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করার অভিযোগে বেঙ্গালুরুর স্টার্টআপের সিইও সূচনা শেঠকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে। এই ঘটনার তদন্তে উঠে আসছে একাধিক তথ্য।
পুলিশ অনুমান করছে, সন্তানকে খুন করার পরিকল্পনা অনেক দিন আগেই করেছিলেন সূচনা। তাঁর অ্যাপার্টমেন্ট থেকে মিলেছে তথ্যপ্রমাণ । গোয়া পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ওই অ্যাপার্টমেন্ট থেকে মিলেছে কাফ সিরাপের (কাশির ওষুধ) একাধিক খালি শিশি। সন্তানকে প্রচুর পরিমাণে ওষুধ খাওয়াতেন সূচনা এমনটাই উঠে আসছে পর্যবেক্ষণে।
সূত্রের খবর, সূচনা যে ঘরে সন্তানকে খুন করেছিলেন, সেখানে পাওয়া গিয়েছে কাফ সিরাপের দু’টি খালি শিশি। একটি বড় এবং অন্যটি তুলনায় ছোট। ওই অ্যাপার্টমেন্টের এক কর্মীকে দিয়ে ছোট কাফ সিরাপের শিশিটি কিনিয়েছিলেন বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।
বেঙ্কট রমনের বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ দায়ের
জানা গিয়েছে, সূচনা কয়েক মাস আগে স্বামী পিআর বেঙ্কট রমনের বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। আদালতে তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চলছে। সেই সময়েই গত অগস্টে স্বামীর বিরুদ্ধে অত্যাচারের অভিযোগ করেন সূচনা। তবে আদালতে সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তাঁর স্বামী। আগামী ২৯ জানুয়ারি তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদের মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ছিল।
গোয়া পুলিশের এক সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে। বিবাহবিচ্ছেদের মামলাটি শেষ পর্যায়ে যাওয়ার পর আদালত সন্তানের বাবাকে প্রতি রবিবার সন্তানের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেয়। সম্ভবত সেই কারণেই মহিলা হতাশ এবং ক্ষুব্ধ ছিলেন। স্বামীর উপর সেই রাগ থেকে সন্তানকে তিনি খুন করে থাকতে পারেন।
ময়নাতদন্তের রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে, বালিশ অথবা কাপড় দিয়ে শ্বাসরোধ করে শিশুটিকে খুন করা হয়েছে
ময়নাতদন্তের রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে, বালিশ অথবা কাপড় দিয়ে শ্বাসরোধ করে শিশুটিকে খুন করা হয়েছে। দেহ নিয়ে বেঙ্গালুরুতে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল মায়ের। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি ,পথে পুলিশ তাঁকে ধরে ফেলে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে কোনও হাতাহাতির খবর মেলেনি।
পুলিশের অনুমান, ওষুধ খাইয়ে শিশুটিকে ঘুম পাড়িয়ে রেখেছিলেন সূচনা। তার পর বালিশ বা কাপড় দিয়ে চেপে ধরেন তার মুখ।
পুলিশের জেরায় অবশ্য সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সূচনা। তার কথায়, তিনি ঘুম থেকে উঠে দেখেন, শিশুটি মারা গিয়েছে।
কিন্তু তার কোন গল্পই আর বিশ্বাসযোগ্য নয় দাবি পুলিশের। ৬ জানুয়ারি গোয়ার অ্যাপার্টমেন্টে গিয়েছিলেন সূচনা। ৮ তারিখ সেখান থেকে বেঙ্গালুরুর ট্যাক্সি ধরেন। আদালত আপাতত তাঁকে ছ’দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে।
শিশুটির বাবা বেঙ্কট ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় কর্মরত। সন্তানের মৃত্যুর খবর পেয়ে তিনি সেখান থেকে চলে এসেছেন। ময়নাতদন্তের পর শিশুর দেহ তাঁর হাতেই তুলে দেওয়া হয়েছে।
English