কলকাতা টুডে ব্যুরো: বিজেপি ও তৃণমূলের ‘নন্দীগ্রাম দিবস’ উদযাপন নিয়ে উত্তপ্ত নন্দীগ্রাম। বৃহস্পতিবার পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামে তৃণমূল এবং বিজেপি আলাদা ভাবে ওই কর্মসূচি পালন করে। আর সেই কর্মসূচিতেই তৃণমূল অভিযোগ তুলল, নন্দীগ্রাম আন্দোলনে বিজেপির কোনও ভূমিকা ছিল না। বিজেপির পাল্টা দাবি, ওই আন্দোলনে লালকৃষ্ণ আডবাণীর মতো নেতা অংশ নিয়েছিলেন তাদের পক্ষে।
২০০৭ সালের ১০ নভেম্বর নন্দীগ্রামে গুলি চালিয়েছিল পুলিশ। তার পরের বছর অর্থাত্ ২০০৮ সাল থেকেই এই দিনটিকে নন্দীগ্রাম দিবস হিসেবে পালন করে ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি। যার নেতৃত্বে থাকে তৃণমূল। তবে শুভেন্দু তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে আলাদা ভাবে ওই কর্মসূচি পালন করেন। বৃহস্পতিবার দু’তরফের ‘নন্দীগ্রাম দিবস’ পালন কর্মসূচি পালনের জন্য সকাল এবং বিকেলে আলাদা ভাবে অনুমতি দিয়েছিল পুলিশ-প্রশাসন। নিজেদের মঞ্চ থেকে নন্দীগ্রামের জন্য বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত, তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ নাম না করে বিঁধলেন বিজেপিকে। আবার রাজ্যের বিরোধী দল নেতা শুভেন্দু অধিকারী তাঁদের মঞ্চ থেকে জবাবও দিলেন তার।
বৃহস্পতিবার তৃণমূলের সভা চলাকালীন শুরু হয় গন্ডগোল। তৃণমূলের একাংশ দাবি করে যে, তারা বিজেপিকে সভা করতে দেবে না। তাদের যুক্তি, নন্দীগ্রাম আন্দোলনে অংশ নেয়নি BJP। তাই তারা কোনও ভাবেই এতে ‘ভাগ বসাতে’ পারে না। সেই দাবিকে সামনে রেখে তৃণমূল নেতা এবং কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে রাস্তায় বসে পড়েন কুণাল। এর পর পুলিশ এসে তাঁদের উঠে যেতে বলে। এর পর অবশ্য তৃণমূল নেতা এবং কর্মী-সমর্থকরা আর অবস্থান চালিয়ে যাননি।
এর পর বিকেলে নন্দীগ্রামে পৌঁছন শুভেন্দু। তৃণমূলের সভামঞ্চ থেকে বিজেপির সভাস্থল ছিল মাত্র ফুট দশেক দূরে। মঞ্চে উঠে তিনিও নাম না করে কটাক্ষ করেন কুণালকে। তাঁর খোঁচা, ”এখানে কিছু ছাঁট মাল কর্মচারী এসেছে।” পাশাপাশি, তৃণমূল নেতাদের অবস্থানের পরেও উঠে যাওয়া নিয়ে তাঁর কটাক্ষ, ‘কোমরে যদি এত জোর তা হলে উঠে গেলি কেন?”
সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে শুভেন্দু বলেন,”এখানে কিছু কর্মচারী থার্ড পার্টি এসেছিল। তারা নাকি অবরোধ করেছিল। কলকাতা থেকে লোক নিয়ে এসে বলছে শুভেন্দু অধিকারী ‘গো ব্যাক’। যদি সত্যিকারের কোমরে জোর ছিল উঠে পালালি কেন পুলিশের হাত ধরে। ২০২১ সালে ৭ জানুয়ারি থেকে প্রত্যেকবার এইভাবে চেষ্টা করেছে। এইভাবে আমাকে আটকানো যায়নি আর ভবিষ্যতেও আটকাতে আপনারা পারবেন না। আর সত্যিই লোক, ক্ষমতা কার সঙ্গে আছে, অবদান কার আছে, না আছে সেটা নিজের মুখে বলব কেন?’ লোকে যারে বড় কয় বড় সে হয়, নিজে যে বড় কয় বড় সে নয়’। তাই নন্দীগ্রামের জনতা উত্তর দেবে, আমাকে উত্তর দেওয়ার দরকার নেই।”