কলকাতা টুডে ব্যুরো: রাজ্যের ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে আরও একবার রাজ্য সরকারকে বিঁধলেন বিরোধী দলনেতা Suvendu Adhikari। শুক্রবার বিকেলে ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে কলকাতা পুরনিগমের কমিশনারের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কমিশনার সময় না দেওয়ায় দেখা করতে পারলেন না শুভেন্দু অধিকারীরা।
শুভেন্দুর দাবি, আগামী দু’দিনের মধ্যে সরকার ডেঙ্গি নিয়ে সঠিক পদক্ষেপ না করলে, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে সোমবার চিঠি লিখে সেন্ট্রাল টিম আসার জন্য আর্জি জানাবেন তিনি।
শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “রাজ্য সরকারের অবহেলা, অপদার্থতা ও উন্নাসিকতার জন্য কোভিডের থেকেও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে ডেঙ্গি। ডেঙ্গি মশাবাহিত, এর একটি মরশুম রয়েছে। সঠিক সময়ে এর মনিটরিং করা দরকার। স্বাস্থ্য দফতর নোডাল এজেন্সি কাজ করে। সঙ্গে পৌর ও নগরোন্নয়ন দফতর, পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর ও সেচ ও জলপথ দফতর কাজ করে। যেহেতু এর সঙ্গে জলাশয়, খাল, মজে যাওয়া নদীগুলির সম্পর্ক রয়েছে, তাই এগুলিকে মিলিয়ে একটি কোঅর্ডিনেশন টিম রয়েছে। এবার কোনও প্রস্তুতি রাজ্য সরকারের তরফ থেকে নেওয়া হয়নি।”
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ, “এমনিতে একটি চল রয়েছে সাধারণ মানুষ, যাঁরা প্রাইভেট ল্যাবরেটরিতে যেতে পারেন না, তাঁদের ডেঙ্গি পরীক্ষা রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগের ল্যাবগুলি করে না। কলকাতার কোনও চিকিত্সক যদি ডেঙ্গি লিখে দেন, তাঁকে আলিপুরদুয়ারের জয়গাঁ বা কালচিনি যেতে হবে। কিংবা পুরুলিয়ার পারা বা রঘুনাথপুরে যেতে হবে। আর পুরুলিয়াতে যদি কেউ লিখে দেন ডেঙ্গি হয়েছে, তাঁকে রাতেই মেইলে বলে দেওয়া হবে কার্শিয়াঙে যোগ দেওয়ার জন্য। এই কারণে চিকিত্সকরা লিখতেও ভয় পান। তাই আজ রাজ্যে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।”
বিগত বছরের পরিসংখ্যানও তুলে ধরেন তিনি। মরশুমের ‘৪৩ তম ডেঙ্গি সপ্তাহের’ হিসেব তুলে ধরে শুভেন্দু বলেন, “২০১৭ সালে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৯ হাজার ৫১৮। ২০১৮ সালে সংখ্যা ছিল ১৬ হাজার ৫৮৬। ২০২১ সালের সংখ্যার তুলনায় এই বছর প্রায় ৫০ হাজারের কাছাকাছি চলে গিয়েছে।” সঙ্গে তাঁর আরও অভিযোগ, “কয়েক লাখ নমুনা পরীক্ষা হয়নি। মৃত্যু মিছিল চলছে। বেসরকারি নার্সিং হোম ও হাসপাতালগুলি ভরে গিয়েছে, রাজ্য সরকারের কোনওরকম হেলদোল নেই।” জেলাওয়াড়ি পরিসংখ্যানের কথা তুলে ধরে মুর্শিদাবাদ, শিলিগুড়ি-দার্জিলিং, কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।
কেন এই ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্ত? তার কারণও এদিন ব্যাখ্যা করেন তিনি। শুভেন্দুর কথায়, “প্রধানমন্ত্রীর নমামি গঙ্গে প্রকল্পের সুবিধা সব রাজ্য পেয়েছে। আমাদের রাজ্য সেই সুযোগ নেয়নি। সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট অন্যান্য রাজ্যে শূন্য হয়ে গেলেও এখানে এজিটি কিছুদিন আগেই জরিমানা করেছে। দক্ষিণ দমদমে, দক্ষিণেশ্বরের কাছে যে ধাপা রয়েছে, সেটি হল ডেঙ্গির এপিসেন্টার।”