নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ডায়মন্ডহারবার যাওয়ার পথে কনভয়ে হামলার ঘটনায় আগের সফরে খারাপ অভিজ্ঞতা হয়েছিল তাঁর। কিন্তু শনিবারের সফরে ‘জামাই আদর’ পেলেন বিজেপি সভাপতি জে পি নাড্ডা। বাড়ি বাড়ি মুষ্টিভিক্ষার কর্মসূচিতে কৃষকের মন ছুঁতে চেয়েছিলেন নাড্ডা। এদিনের বঙ্গ পরিক্রমায় বোঝা গেল তাঁর লক্ষ্যে অনেকটাই সফল বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। পূর্ব বর্ধমানের গ্রাম দেখিয়ে দিল বাংলার আতিথেয়তার নজির। দূরের নাড্ডাক ঘরের করে নেওয়ার জন্য কাটোয়ার প্রত্যন্ত গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে শঙ্খ বাজিয়ে, উলুধ্বনি দিয়ে স্বাগত জানানো হল বাংলার জামাইকে। পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী শনিবার পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ায় সমাবেশ, রোড-শো করেছেন নাড্ডা। যেখানে জনজোয়ার বলে দিচ্ছে একদা বামেদের শক্তঘাঁটি ঘাসফুলে পরিবর্তনের পর আবারও এক পালাবদলের সম্ভাবনা তৈরি করছে।
জে পি নাড্ডার এবারের বাংলা সফরে বিজেপির এবারের লক্ষ্য যে বঙ্গের কৃষক, তা কর্মসূচি থেকেই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল। জগদানন্দপুরের মাঠে শনিবারের সমাবেশের নামও দেওয়া হয়েছিল ‘কৃষক সুরক্ষা সভা’। এদিন জেপি নাড্ডার বক্তব্যের বড় অংশ জুড়ে ছিল বাংলার কৃষকদের ‘বঞ্চনা করা’র প্রতিবাদ এবং তার জন্য রাজ্যের তৃণমূল সরকারের সমালোচনা। সঙ্গে ছিল বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় এলে কী কী করা হবে তার লম্বা প্রতিশ্রুতির ফিরিস্তি।
নীলবাড়ি দখলের লক্ষ্যে নিজেদের ‘কৃষক-দরদী’ প্রমাণ করতে শুধু বক্তব্যেই নয়, নাড্ডার জনসংযোগ কর্মসূচিতেও কৃষকদেরই গুরুত্ব দিয়েছে রাজ্য বিজেপি। আগে থাকেই ঠিক করে রাখা জগদানন্দপুর গ্রামের পাঁচটি বাড়িতে যান নাড্ডা। সঙ্গে ছিলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ, সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়, রাহুল সিংহরা। বাড়িতে বাড়িতে মহিলারাই এগিয়ে আসেন নাড্ডাকে বরণ করে নিতে। উৎসাহীদের ভিড়ে আনুষ্ঠানিক মুষ্টিভিক্ষা গ্রহণ নিয়ে ঠেলাঠেলি হতে দেখা গিয়েছে সব বাড়িতেই। মুঠো ভরে মহিলারাই নাড্ডার কাঁধের গেরুয়া ঝোলায় ভরে দেন ভিক্ষার দান। প্রতিদানে নাড্ডা দেন বিজেপি-র প্রচার পুস্তিকা। গৃহস্থের দেওয়ালে সেঁটে দেন বিজেপি-র স্টিকার। তবে ভিক্ষাগ্রহণের আড়ালে ব্যক্তি ছাড়িয়ে পারিবারিক সম্পর্ক তৈরিই ছিল নাড্ডার আসল উদ্দেশ্য। তাই কোথাও তিনি ভিক্ষাদানকারী পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে গ্রুপ ছবি তোলেন। কোথাও পোষা গরুকে খাওয়াতে ঢুকে পড়েন গোয়ালে।
মুষ্টিভিক্ষা পর্ব সেরে নাড্ডা যান ওই গ্রামেরই কৃষক মথুরা মণ্ডলের বাড়ি। সেখানেই ছিল মধ্যাহ্নভোজের ব্যবস্থা। এর আগে অমিত শাহ সাধারণের বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ সেরেছেন। কিন্তু শনিবার নাড্ডার জন্য যে আয়োজন ছিল, তাতে বাঙালি ছোঁয়া অনেক বেশি ছিল। সম্ভবত সচেতন ভাবেই। নাড্ডার স্ত্রী মল্লিকা বন্দ্যোপাধ্যায় বাঙালি। সেই কথা মনে রেখেই ‘জামাই আদরের’ প্রস্তুতি ছিল। ভাতের সঙ্গে শাক, বেগুনভাজা, তরকারি ছাড়াও শেষ পাতে ছিল পায়েস। বাঙালি কায়দায় বসেই কলাপাতায় সাদা ভাত খান নাড্ডা