হাওড়া, ৩১ জানুয়ারি: গত কয়েক দিনের মধ্যে বড়সড় পালা বদল ঘটেছে বাংলা রাজ্য রাজনীতিতে। একাধিক হেভিওয়েট নেতা তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে। তার মধ্যে অন্যতম হলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবারই দিল্লি গিয়ে অমিত শাহের উপস্থিতিতে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। তারপরই, আজ রবিবার হাওড়ার ডুমুরজলা সভা থেকে তৃণমূলের উদ্দেশ্যে হুঙ্কার ছাড়লেন তিনি। প্রাক্তন দলের প্রতি একের পর এক বিষোদগার করলেন।
এদিন ডুমুরজলা সভা থেকে রাজীব মুখ্যমন্ত্রীকে তীব্র আক্রমণ করেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, কেন্দ্রের কাছে টাকা আদায়ে ব্যর্থ কে? রাজ্য সরকারকে তোপ দেগে এদিন রাজীব বলেন, কেন্দ্র ও রাজ্যে একই সরকার চাই। প্রসঙ্গত এদিন ‘ডাবল ইঞ্জিন’ সরকারের কথা বলেন তিনি। স্পষ্ট বলেন, “কেন্দ্র ও রাজ্যে আমরা একই সরকার চাই। আমরা চাই ‘ডবল ইঞ্জিন’ সরকার। ‘ডবল ইঞ্জিন’ সরকারই মানুষকে দিশা দেখাতে পারবে।’ এরপরই রাজ্যের শিল্প নিয়ে রাজ্যের শাসক দলকে তীব্র আক্রমণ করেন রাজীব। তাঁর মতে, পশ্চিমবঙ্গ শিল্প শ্মশানে পরিণত হচ্ছে। তৃণমূলের শাসনকালে পশ্চিমবঙ্গে যে শিল্পের কোনও উন্নতি হয়নি এদিন রাজীবের কথায় স্পষ্ট তার ক্ষোভ উঠে আসে। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী ও তৃণমূল নেতার কথায় বারবার উঠে আসছিল ক্ষোভের কথা।
এদিন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচিকেও কটাক্ষ করেন। বলেন, কেন ভোটের মুখে সরকারকে দুয়ারে যেতে হচ্ছে? যদি ঠিকমতো কাজ করত সরকার, তবে ভোটের আগে এভাবে ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচি আনতে হত না। সরকার যে সম্প্রতি সবার জন্য স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প এনেছে, তারও এদিন সমালোচনা করেন রাজীব। বলেন, ‘সরকারের এই কর্মসূচি ভাঁওতাবাজি। ভোটের মুখে এভাবে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প রাজ্যবাসীকে ভাঁওতা দেওয়ার জন্যই।’ রাজীবের প্রশ্ন, ‘বলা হচ্ছে, প্রতি পরিবার ৫ লাখ টাকা করে কভারেজ পাবে। যদি এক কোটি পরিবার ৫ লাখ টাকা করে পায় তাহলে কত টাকা হয়? সরকারের বাজেট কত? আমরা জিতে এলে প্রথম দিন থেকেই ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচি ও পাড়ায় সমাধান কর্মসূচি নেব।’ সদ্য তৃণমূলত্যাগী প্রাক্তন মন্ত্রী আরও বলেন, রাজ্যের তৃণমূল সরকার সংখ্যালঘুদের ‘বিজেপি জুজু’ দেখাচ্ছে। এদিন এই সব থেকে বেরিয়ে আসার জন্য রাজ্যবাসীর কাছে আবেদন করেন তিনি।
তিনি জানান, ‘একুশের ভোটে বাংলা জুড়ে পদ্ম ফোটাব।দরকার হলে পাড়ায় পাড়ায় যাব, গ্রামে গ্রামে যাব।’ সভামঞ্চ থেকে তাঁর প্রশ্ন, ‘আমার ভাবতে অবাক লাগে, একটা সময় স্লোগান ছিল বদলা নয় বদল চাই। আর আজ কী হচ্ছে? ‘ সভামঞ্চ থেকেই তিনি রবিবার স্লোগান তোলেন ‘চলো পাল্টাই।’ ‘ভারত মাতা কি জয়’ বলে নিজের ভাষণ শেষ করেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।