কলকাতা, ৩১ জানুয়ারি: কয়েক ঘণ্টার জন্য বঙ্গ সফরে এসে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসকে খোঁচা দিয়ে গেলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। বাঙালি মায়ের মেয়ে স্মৃতি বাংলা, হিন্দির মিশেলে ডুমুরজলার জনসভায় বক্তব্য রাখেন। পুরোটাই দিদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করে। বিজেপি-র যোগদান মেলায় স্মৃতি ইরানি বললেন, ‘তৃণমূল ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনিকে অপমান করছে বলেই ওই দল ছেড়ে নেতা-মন্ত্রীরা বিজেপিতে চলে আসছেন।’ অন্যদিকে, অমিত শাহ তাঁর পুরোনো হুমকি নতুন করে শোনালেন। ‘২০২১ সালে রাজ্যে বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করবে। তৃণমূলকে উপড়ে ফেলবে বাংলার মানুষ।’ এই ভাষাতেই রাজ্যের শাসক দল তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। রবিবার হাওড়ার ডুমুরজলাতে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিজেপির যোগদান সভায় বক্তব্য রাখেন অমিত শাহ। এদিন তিনি বলেন বাংলার মাটিকে অনুপ্রবেশকারীদের জন্য খুলে দিয়েছেন মমতা।
অমিত শাহের দাবি, পশ্চিমবঙ্গে এবার বিজেপির সরকার আসবে। তৃণমূলকে উৎখাত করা হবে। তিনি বলেন একের পর এক কেন্দ্রীয় প্রকল্প থেকে বাংলাকে বঞ্চিত করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলায় গরীব মানুষকে প্রতারণা করেছে তৃণমূল সরকার। রাজ্যে বিজেপির প্রথম মন্ত্রিসভা ‘প্রধানমন্ত্রী আয়ুষ্মান ভারত’-এর পূর্ণ সুবিধা দেবে বাংলার গরিব মানুষকে। প্রত্যেক গরিব মানুষ ৫ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্য কার্ড পাবে। এদিন অমিত শাহ বলেন বাংলার মানুষ পরিবর্তন চাইছে। মা মাটি মানুষের শ্লোগান ভুলে এখন দুর্নীতির শ্লোগান দিচ্ছে তৃণমূল। শুধুমাত্র নরেন্দ্র মোদী প্রকল্প আনছেন বলে, তা বাংলায় আসতে দিচ্ছেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে বঞ্চিত হচ্ছে বাংলার মানুষ। বাংলার গরিব মানুষদের সঙ্গে কেন এই দ্বিচারিতা করছে রাজ্য সরকার, তার জবাব দিতে হবে।
ভাইপোকে মুখ্যমন্ত্রী বানানো ছাড়া রাজ্যের তৃণমূল সরকারের কাছে আর কোনও অ্যাজেন্ডা নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটাই লক্ষ্য, নিজের ভাইপোকে মুখ্যমন্ত্রী বানানো বলে এদিন কড়া ভাষায় মমতাকে আক্রমণ করেন শাহ। তিনি বলেন, নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বিজেপি বাংলায় সরকার গড়বে। সোনার বাংলা তৈরি করা হবে। নেতাজী, রবীন্দ্রনাথের স্বপ্নের বাংলা গড়া হবে। এদিন ভার্চুয়াল ভাষণে অমিত শাহ নতুন অভিযোগ আনেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিরুদ্ধে। কেন্দ্রের কিষান নিধি প্রকল্পে রাজ্য সরকার সম্প্রতি চাপে পড়ে সম্মতি জানালেও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অভিযোগ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার কৃষকদের নাম পাঠিয়েছেন, কিন্তু তাঁদের অ্যাকাউন্ট নম্বর ও অন্যান্য তথ্য পাঠায়নি। বাংলার কৃষকদের এইভাবেই বঞ্চিত করছেন মমতা। তোপ দাগলেন অমিত শাহ।
গত কয়েক দিনের মধ্যে বড়সড় পালা বদল ঘটেছে বাংলা রাজ্য রাজনীতিতে। একাধিক হেভিওয়েট নেতা তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে। তার মধ্যে অন্যতম হলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবারই দিল্লি গিয়ে অমিত শাহের উপস্থিতিতে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। সূত্রের খবর, শুক্রবার সন্ধ্যেয় মধ্য কলকাতার একটি বাড়িতে বৈঠকের আয়োজন করে রেখেছিলেন শুভেন্দু। সেখানেই উপস্থিত ছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত বৈশালী ডালমিয়া এবং প্রবীর ঘোষাল, রথীন চক্রবর্তী। ছিল চা, চানাচুর, আলুর বড়া, বেগুনি।