কলকাতা,২৩ জানুয়ারি : নেতাজি তুমি কার? দেশনায়ক দিবস বনাম পরাক্রম দিবস, ভোটের মুখে নেতাজিকে নিয়ে যেন প্ৰছন্ন যুদ্ধ চলছে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী ও রাজ্যের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের মধ্যে। উপলক্ষ শনিবারের নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫তম জন্ম জয়ন্তী। যখন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শনিবার নেতাজি জয়ন্তী পালন করতে চলে এসেছেন কলকাতায়। টক্কর এমন জায়গায় পৌঁছল যে মমতা নেতাজি ভবনে গেলেন বলে মোদীর সফরসূচিতে রাখা হল এলগিন রোডের বাড়ি।
নেতাজি স্মরণে আজ শনিবার সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ এলগিন রোডে নেতাজির বাড়িতে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সেখানে তাঁর বক্তব্য রেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘পরাক্রম মানে বুঝি না,আমরা দেশনায়ক দিবস পালন করি৷’ রাজ্য কেন দেশনায়ক দিবস পালন করছে, তার ব্যাখ্যা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, ‘পরাক্রম কোন দেশের ভাষা জানি না। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রথমবার নেতাজিকে দেশনায়ক বলেছিলেন। তাই দিনটি দেশনায়ক দিবস হিসেবে পালন করছি।’
মুখ্যমন্ত্রী আরও বললেন, ‘নেতাজি একটা আবেগ। পরাক্রমের অর্থ আমি বুঝি না। তবে উনি দেশের নায়ক ছিলেন। নেতাজি এক চিন্তা, আদর্শ, দর্শন। আমরা ৩৬৫ দিন নেতাজির পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখি৷’ তাছাড়া মমতা প্রশ্ন তুললেন, ‘ন্যাশনাল প্ল্যানিং কমিশন কেন তুলে দেওয়া হল? কেন বন্দরের নাম বদলে দেওয়া হল?’ আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে নেতাজির জন্মদিন ঘিরে সরগরম হয়ে উঠেছে বাংলার রাজনীতি। মোদী বনাম মমতা, দু’পক্ষই ২৩ জানুয়ারিকে বিশেষ দিন হিসেবে ঘোষণা করেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার এই দিনটিকে ঘোষণা করেছেন ‘দেশনায়ক দিবস’ হিসেবে। অন্যদিকে নরেন্দ্র মোদী নেতাজি জয়ন্তী উদযাপন করছেন ‘পরাক্রম দিবস’ হিসেবে।
শনিবার সকালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইটে লেখেন ‘দেশনায়ক সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫তম জন্মদিনে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাই। উনি ছিলেন প্রকৃত নেতা। মানুষের ঐক্যে বিশ্বাসী ছিলেন। আমরা আজকের দিনটা ‘দেশনায়ক দিবস’ হিসাবে পালন করছি। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে বর্ষব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।’ অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টুইটে লেখেন, ‘মহান মুক্তিযোদ্ধা ও ভারতমাতার সত্যিকারের পুত্র নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিনে শত প্রণাম। দেশের স্বাধীনতার জন্য তাঁর ত্যাগ ও আত্মনিবেদন সবসময় স্মরণ করা হবে।’
শনিবার নেতাজি জয়ন্তীতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এলেন কলকাতায়। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে দুটি গ্যালারির উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। ভিক্টোরিয়া স্মৃতিসৌধের নতুন নামকরণ হতে পারে। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর নামে পরিচয় পেতে পারে এই ঐতিহাসিক স্মৃতিসৌধ।