কলকাতা, ২৮ জানুয়ারি: কৃষি আইনের বিরোধিতা করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পদত্যাগ দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধানসভায় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের কোথাও নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারছে না। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত।’ কেন্দ্রের কৃষি আইনের বিরোধিতায় বৃহস্পতিবার বিধানসভায় একটি প্রস্তাব পেশ করা হয়। সেই প্রস্তাবের সমর্থনে বলতে গিয়েই মমতা ওই মন্তব্য করেন। পরে ওই প্রস্তাব পাশও হয়।
কেন্দ্রের বিতর্কিত কৃষি আইনের বিরুদ্ধে বিধানসভায় প্রস্তাব পেশ করেন পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সেই প্রস্তাবকে ঘিরে বিধানসভা চত্বরে ধুন্ধুমার বাধে। প্রায় হাতাহাতি লেগে যায় বাম ও বিজেপি-র মধ্যে। পরে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিতে দিতে বিধানসভা থেকে ওয়াকআউট করেন বিজেপি বিধায়কেরা। বাম-কংগ্রেস জোটে আরও ১১৬ আসনে কাটল জট, বাকি রইল আর ১০১ কৃষি আইনের বিরুদ্ধে পার্থর প্রস্তাব পাঠ শেষ হতেই বিজেপি বিধায়করা ওয়েলে নেমে তার বিরোধিতা করা শুরু করেন। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় সেই সময় কংগ্রেস বিধায়ক সুখবিলাস বর্মাকে বলার জন্য অনুমতি দেন। কিন্তু বিজেপি বিধায়কদের কোলাহলের চোটে সুখবিলাস বলতে চাননি। এর পর স্পিকার বলার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন। মুখ্যমন্ত্রী বলতে শুরু করতেই বিজেপি বিধায়কেরা চিৎকার শুরু করেন। তৃণমূল বিধায়কেরা পাল্টা মমতাকে সমর্থন করে চিৎকার করতে থাকেন। মুখ্যমন্ত্রী যদিও তাঁর ভাষণ থামাননি। বাম এবং কংগ্রেস বিধায়কদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘কৃষকদের স্বার্থে আসুন আমরা এই প্রস্তাব সমর্থন করি।’
দিল্লিতে কৃষক আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, ২৬ জানুয়ারি দিল্লিতে যা হয়েছে, তাতে প্রমাণিত গোয়েন্দা দফতর ব্যর্থ। তাদের কাছে কোনও খবরই ছিল না। পুলিশও ব্যর্থ হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। মমতার মতে, ওই ঘটনার পিছনে এমন কেউ আছে, যার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর ছবি প্রকাশ্যে এসেছে। কৃষকদের দেশদ্রোহী তকমা দেওয়া হয়েছে। দেশের মানুষ এসব ভাল চোখে দেখেন না বলেও মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী। এর পর তিনি বলেন, ‘‘যে কোনও মূল্যে কৃষি আইন প্রত্যাহার করতে হবে। না হলে বিজেপি সরকারকে গদি ছাড়তে হবে। কোনও ক্ষেত্রেই নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারছে না। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত।’’
‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিয়ে বিজেপি বিধায়করা যে সময় ওয়াকআউট করছেন, সেই সময় দুলালের সঙ্গে বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তীর কথা কাটাকাটি হয়। পরে তা প্রায় হাতাহাতির পর্যায়ে পৌঁছে যায়। বাম ও কংগ্রেস বিধায়করা পরিস্থিতি সামাল দেন।