নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বিধানসভা নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলায় কোনও রকমের গাফিলতি বরদাস্ত করা হবে না। ভোট প্রক্রিয়ার কাজে লাগানো যাবে না গ্রিন পুলিশ এবং সিভিক ভলেন্টিয়ারও। করা যাবে না বাইক মিছিলও। এমন কড়া বার্তাই দিলেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরা। শুক্রবার ৩ দিনের রাজ্য সফরের শেষে সাংবাদিক সম্মেলন করে এ কথা স্পষ্টই জানিয়ে দিলেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের আগেই রাজ্যে চলে আসবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। তবে কেন্দ্রের হাতে পর্যাপ্ত বাহিনী নেই। ফলে রাজ্য পুলিশের সঙ্গেই সমন্বয় সাধন করে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দিয়ে ভোট প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। প্রতিটি বুথেই কমিশনের কড়া নজর থাকবে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ে কোনও রকম গাফিলতি বরদাস্ত করব না।’
করোনার মতো অতিমারির আবহে বিধানসভা নির্বাচন। ফলে এক দিকে যেমন আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দিকে কড়া নজর রাখতে হচ্ছে, অন্য দিকে তেমনই নির্বাচনের সময় করোনার সংক্রমণ যাতে বৃদ্ধি না পায়, সে বিষয়টিও গুরুত্ব দিতে হচ্ছে। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জানান, বিহার নির্বাচনের উদাহরণ মাথায় রেখেই রাজ্যে ভোটপ্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। ভোটের সময় টাকার লেনদেনে কড়া নজর থাকবে কমিশনের। তা ছাড়া, ওই সময় রাজনৈতিক প্রভাব খাটানো বা শক্তি প্রদর্শনের প্রবণতার দিকেও লক্ষ রাখবে কমিশন।
কমিশন সূত্রে খবর, রাজ্যের যে ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন, তাতে ৭ কোটি ৩৩ লক্ষ নাম রয়েছে। পাশাপাশি, এ রাজ্যে প্রায় ৭৮ হাজার বুথ রয়েছে। এর সঙ্গে আরও ২২ হাজার সহায়ক বুথ করা হচ্ছে। ফলে বুথের মোট সংখ্যা বে়ড়ে দাঁড়াচ্ছে প্রায় ১ লক্ষ। বুথ কেন্দ্রগুলিতে যথেষ্ট বাহিনী মোতায়েন করা হবে। নির্বাচনের সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের তরফ থেকে সিভিক ভলান্টিয়ার এবং গ্রিন পুলিশ নিয়ে যে অভিযোগ উঠেছে, সে বিষয় রাজ্য প্রশাসনের থেকে খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে। ফলে আসন্ন নির্বাচনে কোনও ভাবেই গ্রিন পুলিশ বা সিভিক ভলান্টিয়ারকে কাজে লাগানো যাবে না। নির্বাচন কমিশন স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর (এসওপি)-র মধ্যে দিয়ে কাজ করে। সেভাবেই গোটা প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছে কমিশন।
মুখ্য নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘গত দু’দিনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বক্তব্য আমরা শুনেছি। এলাকার পরিস্থিতি নিয়ে জেলাশালক এবং পুলিশ সুপারদের রিপোর্ট খতিয়ে দেখা হয়েছে। তাঁদের প্রয়োজনীয় নির্দেশও দিয়েছি। গোটা পরিস্থিতির উপর কড়া নজরে রেখেছি আমরা। প্রতিটি বিষয়ই সমান গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে।’ বৃহস্পতিবার মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে দেখা করে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি ছিল যে সীমান্ত গ্রামগুলিতে বিএসএফ একটি নির্দিষ্ট দলের হয়ে কথা বলছে। একই ভাবে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও অভিযোগের সুরে বলেছিলেন, বাংলাদেশ দিয়ে রাজ্যে বহু মানুষের অনুপ্রবেশ ঘটছে। ফলে ভোটারদের সংখ্যা বাড়ছে। এই দু’টি অভিযোগই খণ্ডন করেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার। তিনি বলেন, ‘এই ধরনের মন্তব্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। বিএসএফ আমাদের দেশকে রক্ষা করে। এবং অত্যন্ত দায়িত্বের সঙ্গে কাজ করে। এমন মন্তব্য করা উচিত নয়। ভোটার তালিকাও যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে তৈরি করা হয়েছে। ফলে এমন কোনও অতিরিক্ত ভোটার থাকার সম্ভাবনা নেই।’