কলকাতা টুডে ব্যুরো: বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কলকাতার কুঁদঘাটে ম্যানহোল পরিষ্কার করতে নেমে প্রাণ হারান ৪ জন। মৃতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করেছে পুরসভা। একইসঙ্গে আহতদেরও ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। কলকাতা পুরসভার তরফে আহতদের ১ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। এর পাশাপাশি আজকের এই ঘটনার পিছনে কার গাফিলতি রয়েছে? কী কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটল? তার কারণ জানতেই ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কলকাতা পুরসভা।
বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ ম্যানহোলে নামেন ৭ জন শ্রমিক। দীর্ঘক্ষণ কেটে যাওয়ায় হাঁকডাক শুরু করেন বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা বাকিরা। কিন্তু কোনও সাড়া-শব্দ পাওয়া যায় না। এরপরই সহকর্মীরা পুলিশ ও দমকলে খবর দেন। কিন্তু দমকল এসেও তাঁদেরকে উদ্ধার করতে পারেনি। এরপর খবর দেওয়া হয় ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টকে। ঘটনাস্থলে পৌঁছান মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। ডুবুরি নামিয়ে ৭ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। প্রায় ২ ঘন্টা ভিতরে জলের মধ্যে আটকে ছিলেন তাঁরা। উদ্ধারের পর ওই শ্রমিকদের স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা ৪ জনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। বাকি ৩ জন এখনও চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ১১৪ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের টাকায় ওই নিকাশি নালার কাজ চলছিল। সেখানে পুরনো নিকাশি নালার সঙ্গে নতুন নিকাশি নালার সংযুক্তিকরণের কাজ হচ্ছিল। নিয়ম অনুযায়ী, অন্য নালা থেকে ওই নালায় জল আসা বন্ধ থাকার কথা। কিন্তু আশপাশের নালায় লিকেজ থাকায় ও নিকাশির জলপ্রবাহ বন্ধ না থাকায় ওই জায়গায় নোংরা জল ঢুকে যায়।
বেশ কিছুদিন ধরেই ওইখানে জল ঢুকে জমেছিল। জল জমে থাকার দরুণ ওই ম্যানহোলে বিষাক্ত গ্যাস তৈরি হয়। প্রায় ৫ ফুটের উপর জল জমে গিয়েছিল। আর ওই জলেই পা পিছলে ডুবে যান ঠিকাকর্মীরা। এরপর ওই বিষাক্ত গ্যাসে দমবন্ধ হয়ে মর্মান্তিক পরিণতি ঘটে। জানা গিয়েছে, ওই শ্রমিকদের কোমরে নিয়ম মতো দড়িও বাঁধা ছিল না। ওই শ্রমিকদের প্রত্যেকেই একটি ঠিকা সংস্থার চুক্তিভিত্তিক কর্মী বলে জানা গিয়েছে।