কলকাতা, ১৫ জানুয়ারি: একটি ফেসবুক পোস্ট ঘিরে বৃহস্পতিবার তৃণমূল সাংসদ তথা অভিনেত্রী শতাব্দী রায়কে নিয়ে যে জল্পনা শুরু হয়েছিল, শুক্রবার তা আরও বাড়ল। শনিবার দিল্লি যাচ্ছেন বীরভূমের তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়। ‘বেসুরো’ শতাব্দীকে নিয়ে ঘোর অস্বস্তিতে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। শুক্রবার একটি সংবাদমাধ্যমকে অভিনেত্রী সাংসদ জানিয়েছেন, দিল্লিতে তো যাচ্ছেনই এবং সেখানে পরিচিত অনেকের সঙ্গেই তাঁর দেখা হতেই পারে। সেই দেখা হওয়ার ব্যাপারটিতে কোনও অস্বাভাবিকতা আছে বলে তিনি মনে করেন না। অমিত শাহর সঙ্গে কি দেখা করবেন? এই প্রশ্নের উত্তরে শতাব্দী বলেছেন, ‘আমি সাংসদ। দিল্লি যেতেই হয়। যে কারও সঙ্গে দেখা হতে পারে। অমিত শাহ আমার পরিচিত। সংসদে গেলে দেখা হয়। কালও দেখা হতে পারে। আবার নাও হতে পারে। আর দেখা হওয়া মানেই আমি বিজেপিতে যোগ দিচ্ছি এমনটা নয়।’
বিধানসভা ভোটের মুখে ফের অস্বস্তিতে শাসক তৃণমূল কংগ্রেস। দলে ‘বেসুরো’ গাইতে শুরু করেছেন শতাব্দী রায়। বীরভূমের তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদের সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট ঘিরে তোলপাড় শুরু হয়ে যায় রাজ্য রাজনীতিতে। শতাব্দী বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন বলে জল্পনা তৈরি হয়। সাংসদ তাঁর লোকসভা কেন্দ্রের নাগরিকদের উদ্দেশ্যে ওই পোস্টে লিখেছিলেন, “এই নতুন বছরে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার চেষ্টা করছি যাতে আপনাদের সঙ্গে পুরোপুরি থাকতে পারি। আপনাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। ১৬ জানুয়ারি শনিবার দুপুর ২টোর সময় আমার সিদ্ধান্ত জনাব। কী সিদ্ধান্ত নেবেন বীরভূমের দু’বারের সাংসদ? শতাব্দী রায় অব্শ্য খোলসা করে কিছু এখনও জানাননি। তবে ইঙ্গিতটা রয়েছেই। তিনি ফেসবুক পোস্টে আরও লিখেছেন, ‘২০০৯ সাল থেকে আপনারা আমাকে সমর্থন করে লোকসভায় পাঠিয়েছেন। আশা করি ভবিষ্যতেও আপনাদের ভালোবাসা পাব।’
দলের সাংসদের এই পোস্ট ঘিরে তোলপাড় তৃণমূলে। ইতিমধ্যেই শতাব্দীর মানভঞ্জনে উদ্যোগী দলের শীর্ষনেতারা। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, ডেরেক ও ব্রায়ান, সৌগত রায় ফোন করেন শতাব্দীকে। আর শুক্রবার দুপুরে অভিনেত্রী-সাংসদের বাড়ি পৌঁছে যান তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। সেখানে শতাব্দীর মানভঞ্জনের চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু অভিনেত্রী সাংসদের সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘শতাব্দী আমার পুরনো পরিচিত ও বন্ধু। দুজনে কিছুক্ষণ একটু গল্প করলাম। শতাব্দী কী সিদ্ধান্ত নেবে সেটা একান্তই ওর ব্যাপার। দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব এই ব্যাপারে যা জানানোর জানাবে। তবে শতাব্দী এখনও তৃণমূলেই আছে।’ তবে কুণাল ঘোষ এটাও শুনিয়ে রাখলেন বিজেপি নেতা মুকুল রায় ফোন করেছিলেন শতাব্দীকে। অভিনেত্রী-সাংসদকে দিল্লি এসে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে বলেন বিজেপি নেতা।
এদিকে অভিনেত্রীর দিল্লি-সফরে নজর রাখছে তৃণমূলও। দিল্লিতে রয়েছে বিজেপির বঙ্গ ব্রিগেড। পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ভোট নিয়ে শাহ-নাড্ডাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন দিলীপ, মুকুল, রাহুল সিনহারা। ঠিক এই দিনটিকেই দিল্লি যাওয়ার ক্ষেত্রে কেন বেছে নিলেন শতাব্দী? সেই সব প্রশ্নও ঘুরপাক করছে।