কলকাতা টুডে ব্যুরো:গাইতে গাইতেই চলে গেলেন বলিউডের তারকা গায়ক কৃষ্ণকুমার কুনাথ ওরফে কেকে। বয়স হয়েছিল ৫৪ বছর। মঙ্গলবার কলকাতার নজরুল মঞ্চে গানের অনুষ্ঠান ছিল তাঁর। লাইভ শো শেষে হোটেলে ফিরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। হোটেলে পড়েও যান বলে খবর। তড়িঘড়ি তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় একবালপুরের কাছে একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।মঙ্গলবার ঘড়িতে তখন রাত সাড়ে ৯টা। চিকিৎসকদের প্রাথমিক অনুমান, হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হয়েছে কেকে-র। নজরুল মঞ্চের এক কর্মীর কথায় সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। তাঁর কথায়, তিনি ১২ বছর নজরুল মঞ্চে কর্মরত। কিন্তু মঙ্গলবারের মত এদৃশ্য তিনি নজরুল মঞ্চে আগে দেখেননি।
নজরুল মঞ্চের ওই কর্মীর অভিযোগ, আসনসংখ্যার থেকে অনেক বেশি ভিতরে ঢুকে যায়। প্রবল ভিড়ের জন্য বিশৃঙ্খলাও দেখা দেয়। যার প্রমাণ প্রেক্ষাগৃহের পিছন দিক থেকে ছোঁড়া বোতল। যা কিনা এদিক ওদিক ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে অনুষ্ঠান শেষের বহু ঘণ্টা পরেও। নজরুল মঞ্চের ওই কর্মী বলেন, কেকে (KK) মঞ্চে ওঠেন সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ। তারপর একটার পর একটা গান গেয়ে যাচ্ছিলেন। মাঝে মাঝে ব্যাকস্টেজে গিয়ে ঘাম মুছে এসে আবার গান ধরছিলেন। ৮টা ৪০ নাগাদ অনুষ্ঠান শেষ হয়। প্রথম থেকেই খুব ভিড় হচ্ছিল। যেখানে আসনসংখ্যা ছিল ২৪৮২, সেখানে ভিড় হয়েছিল প্রায় ৮০০০। ৭টা দরজার ৫টাই খোলা ছিল। মঞ্চের দুদিকেও লোক দাঁড়িয়ে যায়। এসি বন্ধ ছিল না। কিন্তু অত ভিড়ে কাজ করছিল না এসি। দরজা খোলা থাকায়, হাওয়া বেরিয়ে যাচ্ছিল।
যে কলকাতায় অনুষ্ঠান করতে আসা নিয়ে প্রবল উৎসাহী ছিলেন, সেই কলকাতাতেই অনুষ্ঠান শেষে প্রয়াত শিল্পী। মঙ্গলবার নজরুল মঞ্চের অনুষ্ঠান শেষে হঠাৎ শরীর খারাপ। তারপর হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয় সঙ্গীত শিল্পী কেকে (KK)-কে। প্রিয় শিল্পীর অকাল প্রয়াণে শোকস্তব্ধ সব মহল। এই পরিস্থিতিতে নজরুল মঞ্চে বিশৃঙ্খলার অভিযোগ উঠেছে। মাত্রাতিরিক্ত ভিড়ের কারণে দমবন্ধকর পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এপ্রসঙ্গে এদিন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন ,”কেএমসি থেকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল এরপর আর নজরুল মঞ্চে কলেজ প্রোগ্রাম করতে দেয়া হবে না, সেটা এখনো পর্যন্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। কালকে ইয়ং ছেলে মেয়েরা পাগলের মতন করছিল ।আর এসি আমাদের ঠিক ছিল ক্যাপাসিটি যা ছিলো তার চেয়ে বেশি লোক হলে একটু সমস্যা হবেই। একটা লিমিটেশন আছে যেটা 2700 ক্যাপাসিটি সেখানে 7000 হলে নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের একটা সমস্যা হয়। পাঁচিল টপকে গতকাল ছেলেমেয়েরা ভিতরে প্রবেশ করেছে। কন্ট্রোল করা যায়নি মানুষের জন্য। তার মধ্যে পুলিশ লাঠিচার্জ ও করতে পারে না। কেএমডিএ থেকে গতকাল নজরুল মঞ্চে বলা হচ্ছে আর কলেজ প্রোগ্রাম হতে দেয়া হবে না। এখনো পর্যন্ত কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। Kk এর মৃত্যুটা হওয়ার ছিল এটা নিয়ে কোন কন্ট্রোভার্সি করে লাভ নেই। আমি এখন আছি এক মিনিট পর নাই থাকতে পারি।”
বুধবার কেকের পরিবার কলকাতায় চলে আসেন। এসএসকেএম হাসপাতালে কেকের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় সেখানে তার ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে। যে পাঁচতারা হোটেলে কেকেআর ছিলেন এবং যেখানে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সে ঘটনাস্থলে ফরেনসিক টিম গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করে।
এদিন তাকে শেষ দেখা দেখতে উপস্থিত হন গায়িকা উষা উত্থুপ তিনি ও তাঁর অকাল প্রয়াণে শোক প্রকাশ করেন।