কলকাতা, ৮ ফেব্রুয়ারি: ক্রীড়া ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের মহৎ উদ্যোগ। এবার থেকে প্রতি বছর বাংলার সমস্ত প্রাক্তন খেলোয়াড়দের এক হাজার টাকা করে পেনশন দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ‘খেলাশ্রী’ প্রকল্প নিয়ে অনুষ্ঠানে প্রাক্তন খেলোয়াড়দের পেনশন দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এক হাজার টাকা খুব কম। তবু তাঁদের সম্মান জানাতে এই সামান্য টাকার পেনশন দেওয়া হচ্ছে।’ উল্লেখ্য, মঞ্চেই ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের কাছে মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান ‘কত জন প্রাক্তন খেলোয়াড় আছে?’ অরূপ বলে ওঠেন, ‘দু’হাজার।’ মুখ্যমন্ত্রী তখন সবাইকেই পেনশন দেওয়ার কথা বলেন। তবে পেনশন পেতে হলে প্রাক্তন খেলোয়াড়দের কী ধরনের নিয়ম বা শর্ত মানতে হবে সেই বিষয়ে কিছু বলেননি মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, বাংলার ক্রীড়া উন্নয়নের জন্য সরকার ২৬ হাজার ক্লাবকে এক লক্ষ টাকা করে দিয়েছে। এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ক্লাব গুলোকে অনুদানের এই টাকা দেওয়া হয় বলে অনেকেই রাগ করেন। আমি বলি, রাগ করবেন কেন? পাড়ার এই ক্লাবগুলোই তো সব সময় আপনার পাশে থাকে। রক্তদান শিবির থেকে খেলাধূলা সব ক্লাবগুলোই তা করে।’ তিনি আরও জানান, ৮৬১ কোচিং ক্যাম্পকে এক লক্ষ টাকা করে দেওয়া হয়েছে। বাংলায় ৩৪টি স্টেডিয়াম গড়া হয়েছে। ৪০০ খেলার মাঠের উন্নয়ন করা হয়েছে। রাজ্যের ৩৪টি ক্রীড়া সংস্থাকে পাঁচ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হল। হকির অ্যাস্ট্রোটার্ফ ও উন্নয়নের জন্য কুড়ি কোটি টাকা দেওয়া হচ্ছে। সব মিলিয়ে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে বাংলার জন্য ‘ক্রীড়া প্যাকেজ’ ঘোষণায় খুশি ক্রীড়ামহল।
এদিন, খেলোয়াড় ও কোচ মিলিয়ে পঞ্চাশজন ক্রীড়া ব্যক্তিত্বকে ‘খেল সম্মান’, ‘বাংলার গৌরব’ ‘ক্রীড়া গুরু’ ও ‘জীবনকৃতী’ পুরস্কারে সম্মানিত করল রাজ্য সরকার। এবার ‘জীবনকৃতী’ সম্মান পেলেন হকির বীর বাহাদুর ছেত্রী। টেবিল টেনিস জগতে উপেক্ষিত ‘দ্রোনাচার্য’ ভারতী ঘোষ সহ সাত কোচকে (বিভিন্ন বিভাগে) ‘ক্রীড়াগুরু’ খেতাব দেওয়া হল। মেহুলী ঘোষ, সালমা মাঝি, তপন পাল সহ ১৬ জন খেলোয়াড়দের দেওয়া হল ‘খেল সম্মান’। আর ‘বাংলার গৌরব’ খেতাব পেলেন ভারতের প্রাক্তন ফুটবলার অমিত ভদ্র, অমিত দাস, টেবল টেনিসের মান্তু ঘোষ-সহ ২৬ জন খেলোয়াড়।
এদিন খেলাশ্রী প্রকল্প অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকেই সংস্কার হওয়া সন্তোষপুরের কিশোর ভারতী স্টেডিয়াম ও হাওড়ার ডুমুরজলার সবুজ সাথী স্টেডিয়ামের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী।