কলকাতা টুডে ব্যুরো: এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গে একাধিক কর্মসূচিতে অংশ নিতে এই রাজ্যে আছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তার মধ্যেই শুক্রবার বিশ্বভারতীর সমাবর্তনে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বক্তব্য রাখলেন প্রধানমন্ত্রী তথা বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য নরেন্দ্র মোদী। প্রথমবার বিশ্বভারতীর সমাবর্তন অনুষ্ঠান হচ্ছে পড়ুয়াদের উপস্থিতি ছাড়াই। সম্প্রতি দলের প্রচার, সরকারি কর্মসূচি থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে ফিরে ফিরে এসেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। বাংলায় নির্বাচনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর গলায় বারবার বাঙালি আবেগ ছোঁয়া কবিতার পঙতিও শোনা গিয়েছে, যার সিংহভাগই বিশ্বকবির লেখা। উচ্চারণ নিয়ে কেউ কেউ সমালোচনা করলেও, তিনি কথার মধ্যে রবীন্দ্রনাথের উক্তি ব্যবহার করা বন্ধ করেননি। সব মিলিয়ে বাঙালির পরিচয়ের সঙ্গে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে শুরু করেছিলেন তিনি। বিশ্বভারতীর সমাবর্তন মোদীর সেই প্রচেষ্টাকেই নতুন শক্তি দিল।
এদিন ভার্চুয়াল ভাষণে বিশ্বভারতীর ‘দিশা-পত্র’ (ভিশন ডটুমেন্ট) তৈরি করে লক্ষ্যমাত্রা স্থির করতে বিশ্বভারতীকে পরামর্শ দিলেন প্রধানমন্ত্রী। বিশ্বভারতীর আচার্য প্রধানমন্ত্রী মোদী বললেন, ‘আপনারা আপনাদের পথে সফল হন। আপনাদের স্বপ্ন পূর্ণ হোক। আপনাদের থেকে সারা দেশের চাহিদা অনেক। আপনারা আত্মবিশ্বাসে পূর্ণ। এই সময়ে সারা পৃথিবীতে নিজের স্থান পাওয়ার ক্ষেত্রে আপনাদের ভূমিকা নিতে হবে।’ বললেন মোদী।
সমাবর্তন ভাষণে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘এই বছর বাজেটে গবেষণার জন্য আগামী পাঁচ বছরে ৫০ হাজার কোটি টাকা খরচ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নতুন শিক্ষানীতিতে লিঙ্গ নিরপেক্ষ শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মহিলাদের ‘কোডিং’-সহ এমন অনেক বিষয়ে পড়াশোনার সুযোগ দেওয়া হবে। এই সব শিক্ষা থেকে মহিলাদের দূরে রাখা হত। বাংলা এক ভারত ও অখণ্ড ভারতের প্রধান কেন্দ্র ছিল। এখন আধুনিক শিক্ষার ক্ষেত্রেও দেশ তাকিয়ে আছে বাংলার দিকে। বাংলার পড়ুয়াদের দিকে তাকিয়ে আছে।’
‘আলো আমার আলো ওগো, আলোয় ভুবন ভরা’–বিশ্বভারতীর সমাবর্তন বক্তৃতায় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের এই উক্তি তুলে ধরলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বললেন, ‘সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে একসঙ্গে কাজ করার কথা বলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। বিশ্বভারতী নিজের মধ্যেই এক জ্ঞানের উন্মুক্ত সমুদ্র। জ্ঞানের কোনও সীমা নেই, সেই ভাবনা থেকেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপনা করেছিলেন। জ্ঞান, বিচার পাথরের মতো অচল নয়, সচল। বিশ্বের জ্ঞানের কথা ভেবেছিলেন বলেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই প্রতিষ্ঠানের নাম রেখেছিলেন বিশ্বভারতী। ভারতের বিভিন্নতার গৌরবগাথা গাইতেন কবিগুরু।’