কলকাতা, ১৬ ফেব্রুয়ারি: বেনজির প্রতিবাদ পার্শ্বশিক্ষকদের। আদি গঙ্গায় খালি গায়ে এক বুক জলে নেমে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির দিকে রওনা দিলেন পার্শ্বশিক্ষকরা। বেতনের দাবি-সহ একাধিক ইস্যুতে মঙ্গলবার সকালে এমনই অভিনব বেনজির প্রতিবাদের ছবি দেখল কলকাতা। যদিও পরে পুলিশের আর্তি’তে উঠে আসেন প্রতিবাদীরা। তবে এই জল যে বহু দূর গড়াবে, হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা।
পার্শ্ব শিক্ষকদের সংগঠন শিক্ষকমিত্র সমিতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির সামনে এই নজিরবিহীন প্রতিবাদের ডাক দিয়েছিল। পরিস্থিতি সামাল দিতে তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছন কলকাতার পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র।
আদিগঙ্গার পাশেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি। স্থানীয় সূত্রে খবর, এদিন সকাল ১০টা ২০ নাগাদ আলিপুর সংশোধনাগারের কাছে একটি দল জমায়েত করে। সেখানে পাঁচ ছ’জন ছিলেন। অপর একটি জমায়েত হয় আলিপুর পোস্ট অফিসের সামনে। পুলিশের যাতে কোনওরকম সন্দেহ না হয় তাই দু’ভাগে ভাগ হয়ে আসেন প্রতিবাদীরা। জামাকাপড়ের মধ্যে প্ল্যাকার্ডগুলো লুকিয়ে রাখা হয়। এরপরই চুপচাপ চলে আসেন আদিগঙ্গার ধারে। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই আদিগঙ্গার খালে ঝাঁপ মারেন প্রতিবাদীরা।
খবর ছড়াতেই ছুটে আসে বিশাল পুলিশবাহিনী। হাত জোর করে প্রতিবাদীদের জল থেকে উঠে আসার অনুরোধ জানান। রুনু দত্ত নামে এক মহিলাও ছিলেন সেখানে। তাঁকে উদ্দেশ্য করে পুলিশের কাতর আর্তি ‘ম্যাডাম উঠে আসুন।’ পুলিশের উর্দি খুলে রেখে গামছা পরে জলে নেমে পড়েন এক পুলিশ কর্মী। দড়ি ফেলে তুলে আনা হয় প্রতিবাদীদের। জল থেকে উঠেই হাউ হাউ করে কেঁদে ফেলেন রুনু দত্ত নামে এক শিক্ষামিত্র। বলেন, ‘সাত বছর ধরে সংসার ডুবে গিয়েছে। বেতন নেই, ভাতা নেই। সরকারি নির্দেশ সত্ত্বেও কাজ হচ্ছে না। এক প্রকার বাধ্য হয়েই এই প্রতিবাদ।’