অ্যাডিনোভাইরাস নিয়ে উদ্বেগজনক তথ্য দিল রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর
অ্যাডিনোভাইরাস নিয়ে উদ্বেগজনক তথ্য দিল রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। সতর্ক করলেন কেন্দ্রের ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ’ (আইসিএমআর)-এর গবেষকেরা। সম্প্রতি তাঁরা জানান, কলকাতা এবং তার আশপাশের জেলাগুলির সর্বস্তরের সরকারি হাসপাতালে ভর্তি থাকা অ্যাডিনোভাইরাসে আক্রান্ত শিশু ও কিশোরদের কফের নমুনা পরীক্ষা করে অনেকের ক্ষেত্রেই ‘বি৭/৩’ প্রজাতির ভাইরাস পাওয়া গিয়েছে।
১৯৮৭ সালে আর্জেন্টিনায় এবং ২০০৪ সালে পর্তুগালে এই প্রজাতির অ্যাডিনোভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের খোঁজ মিলেছিল
এটি অ্যাডিনোভাইরাসের একটি মারাত্মক প্রজাতি এবং এর মারণ-ক্ষমতা খুবই বেশি। এর আগে কখনও পশ্চিমবঙ্গে বা ভারতের কোথাও অ্যাডিনোর এই ধরনের প্রজাতির কথা উল্লেখ হয়নি। ১৯৮৭ সালে আর্জেন্টিনায় এবং ২০০৪ সালে পর্তুগালে এই প্রজাতির অ্যাডিনোভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের খোঁজ মিলেছিল।সূত্রের খবর আইসিএমআরের অন্তর্ভুক্ত কলকাতার ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কলেরা অ্যান্ড এন্টেরিক ডিজ়িজ়েস’ (নাইসেড)-এর গবেষকেরা কলকাতা ও তার আশপাশের জেলার সরকারি হাসপাতালের ৩১১৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১২৫৭ জন রোগীর দেহে অ্যাডিনোভাইরাস পেয়েছেন। তাদের মধ্যে ৪০ জনের দেহে ‘বি৭/৩’ প্রজাতির অ্যাডিনোভাইরাস মিলেছে। ওই রোগীদের ৯৭ শতাংশের শারীরিক অবস্থা ছিল অত্যন্ত জটিল এবং পরবর্তী কালে অনেকেরই মৃত্যু হয়। নাইসেডের অধিকর্তা শান্তা দত্ত জানালেন, ‘‘অ্যাডিনোর এই মারাত্মক প্রজাতির খোঁজ পাওয়ার কথা আমরা স্বাস্থ্যসচিবকে জানিয়েছি। পরবর্তী কালে এই রোগীদের ফলো-আপ করার সময়ে অনেকেই মারা গিয়েছে বলে আমরা জানতে পারছি। সেই তথ্য সংগ্রহের কাজ এখন চলছে। সেই তথ্যও রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরকে জানানো হয়েছে।’’
‘২০২২-এর ডিসেম্বর থেকে ২০২৩-এর মার্চ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে অ্যাডিনোয় আক্রান্ত হয়ে ১৩০৬১ জন
অতীতে আমরা দেখেছি, ডেঙ্গি বা করোনার প্রকোপের সময়ে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বিরুদ্ধে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা গোপন করার অভিযোগ উঠেছিল। নিজেদের প্রকাশিত রিপোর্টে আইসিএমআর অ্যাডিনোর ক্ষেত্রে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাস্তবের থেকে কম করে দেখানোর ইঙ্গিত দিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বিরুদ্ধে। তারা সেখানে স্পষ্ট লিখেছে, ‘২০২২-এর ডিসেম্বর থেকে ২০২৩-এর মার্চ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে অ্যাডিনোয় আক্রান্ত হয়ে ১৩০৬১ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে এবং তাদের মধ্যে ১৯ জন মারা গিয়েছে বলে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছিল। কিন্তু আমাদের মতে, প্রকৃত পরিস্থিতির নিরিখে সংখ্যাটা মারাত্মক ভাবে কম দেখানো হয়েছে।’ যদিও এ ব্যাপারে রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমকে ফোন করা হলে তিনি ধরেননি। হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজেরও উত্তর দেননি।